টেক্সট মেসেজিং দ্রুত এবং সুবিধাজনক হলেও, সব ধরনের কথোপকথনের জন্য এটি উপযুক্ত নয়। ইমোজি আর সংক্ষিপ্ত বার্তা আমাদের দৈনন্দিন আড্ডার জন্য দারুণ, কিন্তু যখন বিষয়টি হয় গুরুতর, তখন ছোট বার্তায় বলা কথাগুলো ভুলভাবে ব্যাখ্যা হতে পারে- মনে হতে পারে অস্পষ্ট, অশ্রুতিমধুর বা সম্পূর্ণ ভুল। দ্বন্দ্ব সামলানো, গভীর আবেগ প্রকাশ করা কিংবা গুরুত্বপূর্ণ খবর ভাগ করে নেওয়ার মতো সংবেদনশীল বিষয়ে ভুল সময়ে পাঠানো একটি টেক্সট বার্তা উপকারের বদলে অনেক বেশি ক্ষতি করতে পারে।
নিচে এমন ১২টি উদাহরণ দেওয়া হলো, যা পাঠানোর আগে আপনাকে অবশ্যই দু-বার ভাবতে হবে...
সম্পর্ক ছিন্ন করা
কেবল কয়েকটি ডেটের উপর ডিপেন্ড করে একটি প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, কিংবা বছরের পর বছর সম্পর্কে ছিলেন। এমন সম্পর্ক ছিন্ন করা কখনই টেক্সটের মাধ্যমে করা উচিত নয়। টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে শেষ করা অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং অসম্মানজনক। যদি কখনো আপনি এতটা ঘনিষ্ঠ হন যে একে অপরের সঙ্গে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন, তাহলে অন্তত ফোনে বা সরাসরি দেখা করে সম্পর্কের ইতি টানুন। অনেক সময় ভুল–বোঝাবুঝির কারণেও ব্রেকআপ হতে পারে। হয়তো মুখোমুখি আলোচনায় বেঁচে যেতে পারে আপনার সম্পর্ক।
ডেট বাতিল করা
ডেটের আগে উত্তেজনা স্বাভাবিক। তাই শেষ মুহূর্তে ‘সরি, আসতে পারছি না’ পাঠানো, আপনার প্রতি বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে। ফোন করে বা সম্মানজনকভাবে ব্যাখ্যা করে বাতিল করাই উত্তম। প্রয়োজনে পরবর্তী সময়ের প্রস্তাব দিন।
খারাপ খবর জানানো
চাকরি হারানো, মৃত্যু বা কোনো দুর্ঘটনার খবর টেক্সটের মাধ্যমে দিলে তা ঠান্ডা, অমানবিক এবং অপ্রস্তুত মনে হতে পারে। বরং সময় করে ব্যক্তিগতভাবে বা ফোনে কথা বলে এই বার্তা দিন।
দুর্দান্ত খবর দেওয়া
বাগদান, গর্ভধারণ, স্বপ্নের চাকরি- এমন খবর শুধু টেক্সটে বলা একধরনের ঠুনকো ভাব প্রকাশ করে। যারা আপনার প্রিয়জন, তাদের সঙ্গে এমন খবর ভাগ করতে হলে ফোন অথবা সরাসরি দেখা করাই উত্তম।
ব্যক্তিগত বা গোপন তথ্য পাঠানো
জাতীয় পরিচয়পত্র, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, পাসওয়ার্ড বা সংবেদনশীল তথ্য কখনোই টেক্সট মেসেজে পাঠাবেন না। এগুলো সহজেই স্ক্রিনশট হয়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং একবার পাঠালে তা আর ফিরিয়ে নেওয়া যায় না।
গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ
কিশোর সন্তানের দায়িত্বহীনতা, সঙ্গীর অপব্যবহার বা সহকর্মীর অসচেতনতা- এসব জটিল বিষয়ে মুখোমুখি কথা বলুন। টেক্সটের মাধ্যমে আবেগ বোঝা যায় না, বরং ভুল বোঝাবুঝির আশঙ্কা বাড়ে।
ক্ষোভ বা হতাশা প্রকাশ
যখন আপনি কষ্টে থাকেন, তখন তাৎক্ষণিকভাবে কাউকে টেক্সট করে দীর্ঘশ্বাস ফেলতে পারেন। কিন্তু তাতে সম্পর্ক নষ্টও হতে পারে। হেঁটে যান, একটু সময় নিন- তারপর ভাবুন, আদৌ এই কথাগুলো বলা উচিত কি-না।
গুজব ছড়ানো
গুজব, অপবাদ বা কারো ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে লেখা টেক্সট খুব সহজেই স্ক্রিনশট হয়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমন কোনো কিছু টেক্সট করবেন না যা আপনার সম্মান বা বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুন্ন করতে পারে।
চাকরি বা সহকর্মী নিয়ে অভিযোগ
চাকরির বিষয় নিয়ে হতাশা থাকতেই পারে, কিন্তু সহকর্মী বা বস সম্পর্কে নেতিবাচক কিছু টেক্সট করা বিপদ ডেকে আনতে পারে। সরাসরি, পরিমিত আবেগে আলোচনা করাই শ্রেয়।
ঝগড়া বা তর্ক চালিয়ে যাওয়া
মেসেজে ঝগড়া চালিয়ে যাওয়া শুধু ক্ষোভ বাড়ায়। বরং বলুন, ‘চলো পরে শান্ত মাথায় কথা বলি।’ মুখোমুখি দেখা হলে ভুল বোঝাবুঝি কমে, সম্পর্ক মেরামত হয়।
দীর্ঘ, একতরফা মনখারাপের টেক্সট
প্রতুত্তর না পাওয়ার পর দীর্ঘ ক্ষোভের টেক্সট পাঠানো বেশিরভাগ সময়ই বিরক্তিকর মনে হয়। এটি মরিয়া বা হতাশ আচরণ হিসেবে ধরা পড়ে। অপেক্ষা করুন, ফোন করুন বা পরে কথা বলুন।
ক্ষমা চাওয়া
ক্ষমা চাওয়া হলো সম্পর্ক মেরামতের বড় একটি পদক্ষেপ। ‘সরি’ শব্দটা মেসেজে ঠান্ডা বা নিষ্প্রাণ মনে হতে পারে। চেষ্টা করুন মুখোমুখি বলতে, আর যদি না পারেন, অন্তত ফোনে বলুন।

 
                             
                                     সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন