বৃহস্পতিবার, ২২ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


তাহমিনা বৃষ্টি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২৫, ০১:৪৬ পিএম

ভ্রমণ অভিজ্ঞতা

সেদিন জিন্দা পার্কে

তাহমিনা বৃষ্টি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২৫, ০১:৪৬ পিএম

সেদিন জিন্দা পার্কে

ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের দাউদপুর ইউনিয়নে প্রায় ১৫০ একর জমির ওপর অবস্থিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা জিন্দা পার্ক। গাছপালা, পাখির কলকাকলি, জলাধারে ভরপুর এই পার্কে গেলে যে কারও মন প্রশান্তিতে ভরে উঠবে। পার্কটিতে সব ধরনের উটকো ঝামেলা থেকেও মুক্ত। তাই শান্তিময় এই স্থানটিকে এবারের ভ্রমণের জন্য নির্বাচন করা। গত ২৮ ডিসেম্বর ভোরবেলা রওনা হলাম। ঢাকা থেকে জিন্দা পার্কের দূরত্ব খুব বেশি নয়। এই পার্কে যাওয়ার অনেকগুলো পথ আছে। ঢাকা থেকে সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায় হলো ৩০০ ফিট দিয়ে যাওয়া। অর্থাৎ কুড়িল বিশ্বরোড হাইওয়ে দিয়ে কুড়িল হয়ে যেতে হবে কাঞ্চন ব্রিজ; আমরা তাই করলাম! দিক নির্দেশনা অনুযায়ী কাঞ্চন ব্রিজ থেকে অটোরিকশা নিয়ে পৌঁছালাম নারায়ণগঞ্জের জিন্দা গ্রামে। এই গ্রামেই জিন্দা পার্কের অবস্থান। গাড়িতে নেমে পার্কের প্রবেশদ্বারে টিকিটের ব্যবস্থা। ছুটির দিন বাদে টিকিটের দাম ১০০ টাকা।  টিকিট কেটে পার্কে প্রবেশের পর চোখে পড়ল  দুই ধারে গাছের সারি। চেনা-অচেনা নানা জাতের গাছ।

২৫০ জাতের ১০ হাজারেরও বেশি গাছ আছে এখানে। রয়েছে বিশাল শালবন বিহার। যে দিকেই তাকাই সবুজের ছায়াঘেরা উদ্যান। প্রবেশের শুরুতেই একপাশে ঘাসের বিছানায় ছোট্ট চারকোণা জলাধার। তার ওপরে নকল কাঠের গোলাকার ব্রিজ। তার সামনেই একটি মসজিদ। আরেকটু সামনেই একটি মঠ। রাস্তার অন্যপাশে খোলা মাঠ। আমরা একপাশ থেকে দেখতে দেখতে যাচ্ছি। একটুখানি বন পেরিয়ে একটা কৃত্রিম লেক দেখতে পেলাম। সেখানে অনেক মানুষ, কেউ ব্যাডমিন্টন খেলছেন, কেউ চাদর বিছিয়ে বসে গল্প করছেন। লেকের মাঝখানে একচিলতে কৃত্রিম দ্বীপ।  কাঠের পাটাতন আর প্লাস্টিকের ড্রাম দিয়ে ভাসমান ব্রিজ বানানো হয়েছে। ব্রিজ দিয়ে যাওয়া যায়। বেশি লোক একসঙ্গে ব্রিজে উঠলে ভীষণভাবে দুলে ওঠে। দ্বীপটি দারুণ! পানিতে পা ডুবিয়ে ঘাসের ওপর বসে থাকা যায়। অন্যরকম আনন্দে মজে গেলাম আমরা। এখানেই শেষ নয় এ রকম মোট ৫টি লেক আছে জিন্দা পার্কে। ইচ্ছা হলে লেকের পানিতে কিছুক্ষণ ভেসেও বেড়াতে পারবেন। তার জন্য কয়েকটি নৌকা বাঁধা আছে ঘাটে। লেকে ভেসে বেড়ানোর পাশাপাশি উপভোগ করা যাবে প্রকৃতিকে। কাছেই কয়েকটি গাছের ওপর ‘ট্রি হাউজ’। একটু উঠে বসেও থাকা যায়। আমরাও তাই করলাম। নামার সময় কাঠের সিঁড়ি বেয়ে না নেমে লাফিয়ে নামলাম। ‘ট্রি হাউজের’ নিকটস্থ লেকটার ঠিক পাশেই লালমাটির রাস্তা।

রাস্তার দুই ধারে গাছের সারি। পার্কটি কিন্তু বেশ বড়। পুরোটা মিলে ৫০ একর। হাঁটতে হাঁটতে অন্য আরেকটি লেকের পাশে বহু আকাঙ্ক্ষিত পাঠাগারটি খুঁজে পেলাম। চমৎকার স্থাপত্যশৈলিতে বানানো পাঠাগারটি ছবিতে দেখেই প্রেমে পড়েছিলাম। সামনাসামনি দেখেও ভালো লেগেছে। ভেতরে বেশ কয়েকজন ডুবেছিল বইয়ের নেশায়। রোটা ঘুরে দেখতে গেলে খিদে পাবেই। খাবারের ব্যবস্থাও রয়েছে পার্কে। খিদে লাগলে, মহুয়া স্ন্যাকস অ্যান্ড মহুয়া ফুডস রেস্টুরেন্টে খাওয়া যাবে। রাতে থাকার ব্যবস্থাও নাকি আছে। মহুয়া গেস্ট হাউসে রাত কাটানো যাবে। ছায়াঘেরা পার্কটায় হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিলাম, রাতে কী সুনসান নীরব আর অন্ধকারই না হবে স্থানটি! থাকা গেলে দারুণ থ্রিলিং হতো! তবে এখানে রাত কাটানো, কতটা নিরাপদ, সেটা নিয়ে আমি চিন্তিত। একটি লেকের ওপর বাঁশের সাঁকো দেখে খুব ইচ্ছে হলো, পাড়ি দিই। কিন্তু মানুষের ভিড়ে হলো না। ঘুরে একধারে গিয়ে দেখি কতগুলো মাটির ঘর। পার্কটির নাম অদ্ভুত হওয়ার কারণ হিসেবে স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, গ্রামটির নাম জিন্দা গ্রাম। সেই অনুযায়ী পার্কটিকে জিন্দা পার্ক নামে ডাকা হয়। তবে পার্কের নাম ‘ঐকতান পার্ক’ বর্তমানে জিন্দা গ্রামটি আদর্শ গ্রাম হিসেবেই পরিচিত। সব মিলিয়ে এই ভ্রমণটি ছিল একটি রোমাঞ্চকর মনে রাখার মতো ভ্রমণ। 

আরবি/ আরএফ

Link copied!