প্রতিদিনের কর্মব্যস্ত জীবন ও মানসিক চাপের কারণে শহরের কর্মজীবীদের মধ্যে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে অফিসে যাওয়া, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে কাজ, রাতের খাবারের পর ক্লান্ত শরীরে ঘুম—এভাবেই চলে শহুরে মানুষের দৈনন্দিন জীবন। ফলে স্বাস্থ্য সচেতনতা প্রায় উপেক্ষিত থাকে।
কর্মজীবীরা জানিয়েছেন, কাজের চাপের কারণে তাদের স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ছে। ডায়াবেটিস ও স্থূলতা (ওবিসিটি)-সহ নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন তারা। বিশেষ করে ডায়াবেটিসের কারণে দ্রুত ক্লান্তি, হাঁপানি ও অন্যান্য শারীরিক অসুবিধা দেখা দিচ্ছে।
বাংলাদেশ অ্যান্ডোক্রাইন সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী, শহুরে কর্মজীবীদের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ ডায়াবেটিস বা প্রিডায়াবেটিসে ভুগছেন। তবে কর্মস্থলে এ নিয়ে সচেতনতামূলক উদ্যোগ খুবই কম। অনেকের মতে, অফিসের স্ট্রেসই ডায়াবেটিসের কারণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্মস্থলে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, মানসিক সহায়তা, স্বাস্থ্যকর খাবার ও শারীরিক অনুশীলনের ব্যবস্থা থাকলে কেবল কর্মীর নয়, প্রতিষ্ঠানেরও দীর্ঘমেয়াদে সুফল নিশ্চিত হবে।
বারডেম জেনারেল হাসপাতালের একাডেমিক পরিচালক ডা. ফারুক পাঠান বলেন, কর্মক্ষমতা না থাকলে সঠিক ফিডব্যাক পাওয়া যায় না, ফলে প্রোডাকশন কমে যায় এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়।
ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের সিইও অধ্যাপক ডা. শাহেলা নাসরীন বলেন, কর্মস্থলে ফ্রিহ্যান্ড এক্সারসাইজের কিছু ব্যবস্থা থাকলে—প্রত্যেক কর্মী প্রতি ঘণ্টায় ৫-১০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করলে তারা বেশি ফিট থাকবেন।
চিকিৎসকরা আরও সতর্ক করছেন, ডায়াবেটিস শুধুমাত্র ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সমস্যা নয়, এটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে কর্মজীবীরা দিনের সক্রিয় সময়ের প্রায় ৬০ শতাংশ অফিসে কাটাচ্ছেন। দীর্ঘ সময় বসে থাকা ও অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস এই ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। তাই কর্মস্থলে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ গড়ে তুললে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে বড় অগ্রগতি সম্ভব।


সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন