ছদ্মবেশ ধারণ ও ভুয়া পরিচয়ের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান চালিয়েছে মেটা। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে প্রতিষ্ঠানটি ফেসবুক থেকে এক কোটি অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলেছে।
মেটার দাবি, এই অ্যাকাউন্টগুলো বট বা সাধারণ স্প্যাম অ্যাকাউন্ট ছিল না, বরং প্রকৃত ব্যবহারকারীরাই অন্য পরিচয়ে ভান করে প্ল্যাটফর্মের নীতি লঙ্ঘন করছিলেন।
কেন এই পদক্ষেপ?
মেটা জানিয়েছে, জনপ্রিয় কনটেন্ট নির্মাতাদের নাম, ছবি বা পরিচয় ব্যবহার করে অনেকেই ফেসবুকে ভুয়া প্রোফাইল তৈরি করছিলেন। এসব প্রোফাইল সাধারণ ব্যবহারকারীদের বিভ্রান্ত করত এবং অ্যালগরিদমকে ফাঁকি দিয়ে নিজেদের পোস্ট ভাইরাল করতে চেষ্টা করত। এতে প্রকৃত নির্মাতারা ক্ষতিগ্রস্ত হতো।
এ ছাড়া, প্রায় ৫ লাখ অ্যাকাউন্ট স্প্যাম বা বটের মতো আচরণ করছিল বলে সেগুলোকেও ডিলিট করা হয়েছে। এসব অ্যাকাউন্ট একই কনটেন্ট বারবার পোস্ট করে ফিডকে বিরক্তিকর ও অপ্রাসঙ্গিক করে তুলছিল।
তৃতীয়ত, ‘অননুমোদিত কনটেন্ট’ বা অনুমতি ছাড়া অন্যদের লেখা, ছবি বা ভিডিও ব্যবহার করা অ্যাকাউন্টগুলোর বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

মেটা জানিয়েছে, ছদ্মবেশ ধারণ শুধু পাবলিক ফিগার বা ইনফ্লুয়েন্সারদের জন্য নয়, বরং প্ল্যাটফর্মে ‘আসল কণ্ঠস্বর’ ও অরিজিনাল কনটেন্টের নাগালের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
এই জাল প্রোফাইলগুলো অনেক সময় যাদের নাম ব্যবহার করে, তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে ফলোয়ার বাড়ায়। ফলে বিভ্রান্তি ছড়ায় এবং ফেসবুকের স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন হয়।
আসল অ্যাকাউন্টও বন্ধ?
যদিও মেটা দাবি করেছে, কেবলমাত্র নিয়ম লঙ্ঘনকারী অ্যাকাউন্টই সরানো হয়েছে।
এদিকে অনেক ব্যবহারকারী অভিযোগ করেছেন, তাদের বৈধ অ্যাকাউন্টও কোনো ধরনের পূর্ব-সতর্কতা ছাড়াই বন্ধ হয়ে গেছে।
রেডিট ও এক্স (সাবেক টুইটার)-এ বহু ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, তাদের বছরের পর বছর ধরে জমিয়ে রাখা স্মৃতি, যোগাযোগ বা প্রয়োজনীয় তথ্য ডিলিট হয়ে গেছে।
মেটা জানিয়েছে, ভুলবশত কোনো অ্যাকাউন্ট বন্ধ হলে আপিল করার সুযোগ রয়েছে, তবে অনেকেই এই প্রক্রিয়াকে জটিল ও অনিশ্চিত বলে মনে করছেন।
অরিজিনাল কনটেন্টে জোর
নকল কনটেন্ট বা কপি-পেস্ট করে পোস্ট করা হলে সেই কনটেন্টের রিচ কমিয়ে দেওয়া হবে এবং প্রয়োজনে মনিটাইজেশন সুবিধাও বাতিল করা হতে পারে বলে জানিয়েছে মেটা।
ভবিষ্যতে এমন ব্যবস্থা আসতে পারে, যেখানে অন্যের কনটেন্ট ব্যবহার করলে তার আসল মালিকের নাম ও লিঙ্ক স্বয়ংক্রিয়ভাবে দেখাবে।
তবে কেউ যদি ট্রেন্ডিং কনটেন্টের সঙ্গে নিজের মত, ব্যাখ্যা বা সম্পাদনা যোগ করে, তাহলে সেটিকে ‘অরিজিনাল’ হিসেবে গণ্য করা হবে।

এআই দিয়ে শনাক্ত হচ্ছে নকল কনটেন্ট
মেটা প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ জানিয়েছেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি এআই ‘সুপার ক্লাস্টার’ তৈরি করছে, যার সাহায্যে খুব সহজেই বোঝা যাবে কোন কনটেন্ট আসল আর কোনটা নকল। স্বয়ংক্রিয়ভাবে নকল অ্যাকাউন্ট শনাক্ত এবং অপসারণের কাজ এই প্রযুক্তির মাধ্যমে আরও দ্রুত ও নির্ভুলভাবে হবে।’
কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য গাইডলাইন
মেটা কিছু নির্দিষ্ট নির্দেশনাও দিয়েছে কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য। সেগুলো হলো:
১) অন্যের কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই অনুমতি নিতে হবে।
২) কনটেন্টে নিজের বক্তব্য, মতামত বা সম্পাদনা যুক্ত থাকতে হবে।
৩) ওয়াটারমার্ক বা অন্য অ্যাপের লোগোযুক্ত কনটেন্টের রিচ কমে যেতে পারে।
৪) সঠিক শিরোনাম, হ্যাশট্যাগ এবং কনটেন্ট অনুযায়ী ক্যাপশন দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
৫) ক্যাপশনে কোনো ধরনের লিঙ্ক না দেওয়ার পরামর্শ।

 
                             
                                     সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
       -20251031020255.webp) 
       -20251031020205.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন