মঙ্গলবার (৬ মে) গ্রেনেড হামলা মামলায় অভিযুক্ত তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিলের ওপর শুনানি হবে।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (৪ মে) বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় অভিযুক্ত তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিলের ওপর শুনানির জন্য মঙ্গলবার (৬ মে) দিনটি ধার্য করেন।
রোববার (১ ডিসেম্বর) হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় অভিযুক্ত তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আসামিদের ডেথ রেফারেন্স নাকচ করে খালাস দিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্ট রায়ে বলেছেন, কোনো আসামিকে শুধু স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে সাজা দেওয়া যায় না। আবার এর ওপর ভিত্তি করে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রও প্রমাণ করা যায় না এবং দ্বিতীয় চার্জশিট আমরা আমলে নিতে পারছি না। কারণ দ্বিতীয় চার্জশিটের ক্ষেত্রে ১৯১বি প্রযোজ্য হয় না। এই চার্জশিট আইনের দৃষ্টিতে অগ্রহণযোগ্য। কারণ সেটা শুধু মুফতি হান্নানের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছিল।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও মোহাম্মদ শিশির মনির, লুৎফুজ্জামান বাবর ও আবদুস সালাম পিন্টুসহ অন্য অভিযুক্তদের পক্ষে শুনানি করেন।
আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, মুফতি হান্নানের প্রথম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে প্রথম চার্জশিট দেওয়া হয়েছিল। সেখানেও জবানবন্দির বাইরে অন্য কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয় চার্জশিটে তারেক রহমান ও লুৎফুজ্জামান বাবরসহ, যাদের আনা হয়েছিল তাদের বিষয়েও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ছাড়া আর কোনো প্রমাণ নেই। আবার জবানবন্দি দুটো জীবদ্দশায় মুফতি হান্নান প্রত্যাহার করে গেছেন। ফলে প্রত্যাহার করা জবানবন্দি ও পরবর্তীতে আর কোনো প্রমাণ না থাকায় সাজা দেওয়া যায় না। এমনকি যে আসামি জবানবন্দি দিয়েছেন, বেঁচে থাকলে তাকেও সাজা দেওয়া যেত না।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আওয়ামী লীগের ২৪ নেতাকর্মী নিহত হয়। ওই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০১৮ সালে আদালত মামলার রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন এবং ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেন। রায়ের পর মামলার সব নথি পাঠানো হয় হাইকোর্টে।
আপনার মতামত লিখুন :