ঢাকা মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫

হাসিনার মামলায় তৃতীয় দিনের যুক্তিতর্ক শেষ

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২৫, ০৬:০৯ পিএম
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি -সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের তৃতীয় দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। পরবর্তী যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আগামীকাল বুধবার (১৫ অক্টোবর) দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন।

দিনভর রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এ সময় তিনি জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের বিভিন্ন তথ্যচিত্র, সাক্ষীদের জবানবন্দি ও প্রামাণ্য প্রমাণ উপস্থাপন করেন। একইসঙ্গে শেখ হাসিনার সঙ্গে হাসানুল হক ইনু ও শেখ ফজলে নূর তাপসের কথোপকথনের অডিও রেকর্ডও ট্রাইব্যুনালে বাজিয়ে শোনানো হয়।

এর আগে সোমবার (১৩ অক্টোবর) দ্বিতীয় দিনের যুক্তিতর্কে রাষ্ট্রপক্ষ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করে। প্রসিকিউশন জানায়, এসব তথ্য ও ভিডিও প্রমাণ মামলার বিচারকাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক শুরু হয় গত ১২ অক্টোবর। ওইদিন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সংঘটিত গুম, খুন ও সহিংসতার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন এবং এসব ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্তদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ উপস্থাপন করেন।

এর আগে, গত ৮ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরকে তৃতীয় দিনের মতো জেরা শেষ করেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। পরদিন যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য তারিখ নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল।

মোট ২৮ কার্যদিবসে এ মামলায় ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীর ছিলেন রাষ্ট্রপক্ষের শেষ (৫৪তম) সাক্ষী। তিনি জবানবন্দিতে জানান, গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় ৪১টি জেলার ৪৩৮টি স্থানে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় এবং ৫০টিরও বেশি জেলায় মারণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়।

অন্য সাক্ষ্যপ্রমাণে দেখা যায়, আন্দোলনের সময় তিন লাখ পাঁচ হাজারের বেশি গুলি ছোড়া হয়েছিল। এছাড়া বিভিন্ন টেলিভিশন প্রতিবেদনের মাধ্যমে আন্দোলনকালীন সহিংসতার প্রমাণ ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়।

গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে ট্রাইব্যুনাল। তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ এনেছে প্রসিকিউশন। মামলার মোট পৃষ্ঠাসংখ্যা ৮ হাজার ৭৪৭; যার মধ্যে দালিলিক প্রমাণাদি ও সাক্ষ্যতালিকা রয়েছে পৃথকভাবে সংযুক্ত।