জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকা বারের আইনজীবীদের ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দায়ের করা মামলায় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতা কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশ সদস্যের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে সাবেক এই মন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘এই তুমি সামনে যাও, তুমি বেশি লাফাচ্ছ।’
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অষ্টম তলায় হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামরুল ইসলামকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। শুনানিতে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, আসামি ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তিনি এ ঘটনার ইন্ধনদাতা। তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো প্রয়োজন।
এ সময় আসামি পক্ষের আইনজীবী আফতাব মাহমুদ চৌধুরী ও নসিম চৌধুরী আদালতে ওকালতনামা দাখিল করেন। তারা জানান, জামিনের আবেদন পরবর্তী সময়ে করা হবে। যুক্তিতর্ক শুনে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুল ইসলাম তদন্ত কর্মকর্তার আবেদন মঞ্জুর করে তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।
শুনানি শেষে কামরুল ইসলামকে আদালতের লিফটে নামানো হয়। লিফট থেকে নেমে হাজতের দিকে যাওয়ার পথে পুলিশ সদস্যরা জোরে হাঁটাতে চাইলে রেগে যান সাবেক এই খাদ্যমন্ত্রী। লাঠিতে ভর দিয়ে আস্তেধীরে হাঁটেন তিনি। মাঝে তাকে কয়েকবার দাঁড়িয়ে যেতেও দেখা যায়।
এ সময় এক পুলিশ সদস্য বারবার বাঁশি বাজিয়ে নির্দেশনা দিতে থাকলে বিরক্ত হয়ে সাবেক মন্ত্রী বলেন, ‘এই তুমি সামনে যাও, তুমি বেশি লাফাচ্ছ।’ তখন ওই পুলিশ সদস্য তার সামনে থেকে সরে যান।
এরপর পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতায় লাঠিতে ভর দিয়ে হাজতে ফেরেন কামরুল ইসলাম। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাকে নিয়ে প্রিজন ভ্যান কাশিমপুর কারাগারের উদ্দেশে যাত্রা করে।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, কারাগারে তার স্বাস্থ্যগত অবস্থা, নিরাপত্তা ও আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ সংক্রান্ত ব্যবস্থা পরবর্তী নিয়ম অনুযায়ী পরিচালিত হবে বলে।
উল্লেখ্য, জুলাই মাসে রাজধানীতে ছাত্র আন্দোলন ঘিরে বারবার উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। তখন ঢাকা বারের আইনজীবীদের ওপর হামলার ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন ওঠে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতেই এ মামলা দায়ের করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, মামলাটির অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তার ও তদন্ত কার্যক্রমও চলমান রয়েছে।



