বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৪, ০৬:১৭ পিএম

জলবায়ু নিয়ে সিম্পোজিয়াম

‘রেইন প্যাটার্ন’ বদলে শঙ্কায় বাংলাদেশ

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৪, ০৬:১৭ পিএম

‘রেইন প্যাটার্ন’ বদলে শঙ্কায় বাংলাদেশ

ছবি, রূপালী বাংলাদেশ

জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যাপক প্রভাব পড়ছে আমাদের জীবন ও জীবিকায়। চলতি বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৫.৮ মিলিয়ন মানুষ। কৃষি অর্থনীতির দেশে বদলে যাচ্ছে হাজার বছরের ‘রেইন প্যাটার্ন’; যা দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতির কারণ। বিরুপ প্রভাবে বেড়েছে দুর্যোগের সংখ্যা এবং আসছে ভীন্নতাও। অন্যদিকে কমছে মানুষের অভিযোজন ক্ষমতা। ইতোমধ্যে প্রায় ৯০ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। যাদের মধ্যে বেশির ক্ষতিগ্রস্থ নারী ও শিশু।

তাই অভিযোজন ক্ষমতা বাড়াতে গ্রামীণ পর্যায়ে সচেতনতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করা দরকার। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কৌশল নির্ধারণে অ্যালামিং সিস্টেম গতিশীল এবং আইটি সিস্টেমকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। তবে সবার আগে দরকার যৌথ বিনিয়োগ ও ব্যবস্থাপনার কৌশল নির্ধারণ।

আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়ামে মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকালে এসব কথা বলেন দেশ বরেণ্য চিকিসক ও জলবায়ু বিজ্ঞানীরা। রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে ‘সিআইএস এবং এ-প্যাড’ যৌথভাবে এই অধিবেশনের আয়োজন করে। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন এবং জরুরী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাই চ্যালেঞ্জ ও দুর্যোগ সহনশীল বিশ্ব গড়ে তুলতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলেন তারা।
 


আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি, ডিসিএইচ ট্রাস্ট এবং এ প্যাডের চেয়ারম্যান প্রফেসর কাজী কামরুজ্জামান, সিআইএস-এর নির্বাহী পরিচালক মো. গোলাম মোস্তফা। সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন এশিয়া প্যাসিফিক অ্যালায়েন্স ফর ডিজাস্টার দক্ষিণ-এশিয়া অঞ্চলের ডিরেক্টর কাওরি নেকি, মার্সি মালয়েশিয়া এশিয়া-প্যাসিফিকের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মোহাম্মাদ হাফিজ বিন মোহাম্মদ আমিরুল, জাইকার প্রতিনিধি মেরি মিউরাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও জলবায়ু বিজ্ঞানীরা।

সম্মেলনে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, জাপান বাংলাদেশের দীর্ঘ দিনের বন্ধু। আসলে পাতা দিয়ে আমাদের বন্ধুত্বের শুরু। অন্যদিকে আরো মিল হলো- জাপানেরা চারপাশে সাগর। সেখানে টাইফুন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ আছে। তাই নতুন মিশন নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে জাপানের অনেক বিনিয়োগ আছে। থাইল্যাডের বিনিয়োগ কমিয়ে আমরা বাংলাদেশে আনার পরিকল্পনা করছি। অন্যদিকে, জলবায়ুর বিরুপ প্রভাব মোকাবেলায় কি ব্যবস্থা নেয়া যায়Ñ তাই এখন ভাবনার বিষয়। প্রতিরোধে নুতন মিশন নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই। ভবিষ্যতে আমাদের সম্পর্ককে আরো গভীরে নিয়ে যেতে চাই বলেন রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা।

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন কৌশল নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রফেসর কাজী কামরুজ্জামান বলেন, আমাদের অতি জনসংখ্যা এবং অব্যবস্থাপনার কারণে ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের কৌশল নির্ধারণ করতে পারছি না। যার কারণে প্রকৃতির প্রতিটি স্তরে আঘাত হানছে। আমাদের অক্সিজেন হচ্ছে বনায়ন। আমাদের বনায়ন বাড়াতে হবে, অন্যদিকে অশুভ পরিবর্তন ঠেকাতে বিনিয়োগ দরকার।

সম্মেলনে মালয়েশিয়ার হাফিজ বিন আমিরুল বলেন, বাংলাদেশ এবং ভারত এই অভিযোজনের মধ্যে রয়েছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের প্রত্যেককে ভাবতে হবে। ইতোমধ্যে কপ২৯ -এ আমরা বিষয়গুলো তুলে ধরেছি। অন্যদিকে দুর্যোগ প্রশমনে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যসূচিতে বিভিন্ন কৌশল লিপিবদ্ধ করা হলে সবাই উপকৃত হবে।

সম্মেলনে জাইকার প্রতিনিধি মেরি মিউরা বলেন, ভৌগলিক ও পরিবেশগত দিকে থেকে ঝুঁকির ভিন্নতা রয়েছে। তাই গ্রামীণ পর্যায়ে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কৌশল সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। অ্যারামিং সিেেস্টমের মাধ্য আইটি বিষয়ে ক্ষমতা বৃদ্ধি করা দরকার বলেন তিনি।

কর্ণফুলী গ্রুপের পরিচালক এম বি জামান বলেন, প্রকট প্রভাব প্রকৃতির প্রতিটি স্তরে আগাত হানছে। ঘুর্নিঝড়, ভুমিধস, সাইক্লোন, খরা অদিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টি এখন ভয়াবহ; আমাদের ধরে ফেলেছে। বিশেষত গ্রামীণ পর্যায়ে ভয়াবহ পর্যায়ে রয়েছে। মোবাবেলায় বেসরকারি খাতকেও এখানে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে এবং নতুন করে ডিজাইন করা দরকার। ভাবতে হবেÑ আমরা কিভাবে এখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারি? তাই আন্তর্জাতিকভাবে একত্রিতভাবে কাজ করা দরকার।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক শামস মনসুর গনি বলেন, তাপমাত্রা বাড়ছে। ইতোমধ্যে ১.৫ ডিগ্রি বেড়েছে। আরো খারাপ কিছুু হতে চলেছে। তার মধ্যে সাইক্লোন আমাদের আতঙ্কিত করে তুলেছে। আমাদের পাশে হিমালয়ের ২০ শতাংশ বরফ গলেছে। বঙ্গোপসাগরে হঠাৎ কালো মেঘ জমছে, আশঙ্কার বৃষ্টি ও ঝড় হচ্ছে তীব্র। আমাদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের জীবন ও জীবিকা সংক্রমিত হচ্ছে। আরো ভয়ের কারণ হলো- কৃষি প্রধান দেশের রেইন প্যাটার্ন বদলে গেছে। সিলেটের ডাউকী নদীর পূর্বে মেঘালয়ের দিকে সরে গেছে। যা অত্যান্ত ভয়ের কারণ।  

তাহমিনা পারভীন বলেন, মিলিয়ন মানুষ স্থান বদল করেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে চলতি বছরে ৫.৮ মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তাদের বেশিভাগ নারী ও শিশু। অধিকাংশ নারীর গর্ভপাত হয়েছে, অনেক শিশু পানিতে ডুবে মারা গেছে বলেন তিনি।  

ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজের প্রফেসর ডা. সারিয়া তাসনিম বলেন, প্রকৃতিক দুর্যোগ কিছুটা মানুষের তৈরি। এখন প্রত্যেকের হাতে মোবাইল ফোন। তাই সচেতনতায় মোবাইল ফোনে অ্যাপের মাধ্যমে তাদের সচেতন করা যেতে পারে। তাই টেকনোলজির ব্যবহার বাড়ানোর প্রতি গুরুত্ব দেন তিনি।

সম্মেলনে ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ডা. নাজমুস সাকিব বলেন, আমাদের জীবন-জীবিকা প্রকট হচ্ছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা কপ২৯ সম্মেলনে অংশীজনদের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে, বিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে দুর্যোগ কৌশল নিয়ে অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান এই চিকিৎসক।
সিম্পোজিয়াম সঞ্চালনা করেন সাদিয়া সামাদ মৌ, ডা. মো. ফুয়াদুল ইসলাম ও ওমর শরীফ ইবনে হাসান।

আরবি/এস

Link copied!