জলবায়ু সংক্রান্ত আইসিজে’র মতামত বৈশ্বিক নীতি পরিবর্তনে সাহস যোগাবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
শনিবার (২ আগস্ট) পরিবেশ অধিদপ্তরে আয়োজিত ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রগুলোর বাধ্যবাধকতা’ বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) উপদেশমূলক মতামত নিয়ে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রগুলোর বাধ্যবাধকতা সংক্রান্ত আইসিজে’র উপদেশমূলক মতামত বাধ্যতামূলক না হলেও এটি বৈশ্বিক জলবায়ু নীতি পরিবর্তনে নৈতিক সাহস জোগাবে এবং আন্তর্জাতিক নীতিনির্ধারণে চাপ সৃষ্টি করবে। এ চাপ বিবেচনায় নিয়ে রাষ্ট্রগুলোকে নীতিমালায় পরিবর্তন আনতে হবে।
উপদেষ্টা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এমন একটি ইস্যু যেখানে শুধু সুশীল সমাজ নয়, তরুণ প্রজন্মকেও সম্পৃক্ত করতে হবে। আজকের প্রজন্ম হয়তো টিকে যাবে, কিন্তু ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এখনই পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনবে।
উপদেষ্টা নদীভাঙন, অবকাঠামোগত দুর্বলতা, জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনা এবং স্থানীয় সরকারের সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়েও আলোকপাত করে বলেন, নদীভাঙনপ্রবণ এলাকায় পুনর্বাসন ছাড়া টেকসই সমাধান সম্ভব নয়। ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ডকে আরও কার্যকর করতে হবে, যেখানে সরকার ও এনজিও যৌথভাবে কাজ করবে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ‘ন্যাচারাল রিসোর্স প্রটেকশন’ ও ‘মরাল অবলিগেশন’-এর দৃষ্টিভঙ্গির কথা তুলে ধরে বলেন, ‘আসুন, ১০-১২টি পরিবেশবান্ধব বার্তা তৈরি করে তরুণদের মাধ্যমে দেশের জন্য শক্তিশালী জলবায়ু বার্তা পৌঁছে দিই।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- আইনজীবী ও জলবায়ু পরিবর্তন নিগোশিয়েটর অ্যাডভোকেট হাফিজ খান। এ সময় অধ্যাপক পায়াম আখভান, অধ্যাপক মেরি-ক্লেয়ার ও নিকোল অ্যান ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান, ন্যাকমের নির্বাহী পরিচালক এস.এম. মুনজুরুল হান্নান খান, অ্যাকশনএইড’র কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, পিকেএসএস’র উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বী সাদেক আহমেদ, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. জিয়াউল হক ও মির্জা শওকত আলী, ব্রাক’র পরিচালক লিয়াকত আলী, সিপিআরডি’র প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা, ফ্রেন্ডশিপ’র সিনিয়র পরিচালক কাজী আমদাদুল হক এবং ইয়ুথ নেট গ্লোবাল’র নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান।
গোলটেবিল আলোচনায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, তরুণ প্রতিনিধি, পরিবেশবাদী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
আপনার মতামত লিখুন :