কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে আসার সময় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজের বাঁ-পাশের ল্যান্ডিং গিয়ারের চাকা খুলে পড়ে যাওয়ার ঘটনায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
তদন্তে দেখা গেছে, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না করায় চাকা খোলার মতো বিপজ্জনক ঘটনা ঘটেছে।
বিমান সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ওই উড়োজাহাজটির ল্যান্ডিং গিয়ারে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে কোনোরকম রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি। অথচ উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানির নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতি ছয় মাস অন্তর ল্যান্ডিং গিয়ারের নিয়মিত মেইন্টেন্যান্স বাধ্যতামূলক।
রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে গিয়ারে থাকা গ্রিজ শুকিয়ে গিয়েছিল। ফলে উড্ডয়নের সময় চাকা খুলে পড়ে যায়।
দুর্ঘটনার দিন কক্সবাজার-ঢাকা রুটে উড্ডয়নের আগে বিমানের ইঞ্জিনিয়ারিং টিম নিয়মমাফিক ইন্সপেকশন করে রিপোর্টে উল্লেখ করে- ‘সব হুইল কন্ডিশন ও সিকিউরিটি সন্তোষজনক।’ অথচ বাস্তবে তার বিপরীত ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, উড়োজাহাজটি সেদিন আরও একটি ফ্লাইটে, সিলেট রুটেও চলাচল করেছিল এবং এখন পর্যন্ত মোট ৯,৭৬৮ বার ল্যান্ডিং করেছে।
বিমান বাংলাদেশ সূত্র জানায়, ঘটনায় ফ্লাইট সেফটি ম্যানুয়ালের ধারা ৭.৮ অনুসারে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে প্রধান তদন্তকারী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ফ্লাইট সেফটি বিভাগের প্রধান ক্যাপ্টেন এনামুল হক তালুকদার।
সদস্য হিসেবে রয়েছেন ক্যাপ্টেন আনিসুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার অফিসার মো. নাজমুল হক (সদস্য সচিব) এবং পাইলট অ্যাসোসিয়েশন থেকে একজন প্রতিনিধি।
কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনার কারণ নির্ধারণ এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে সুপারিশ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার সময় কক্সবাজার বিমানবন্দরে আরেকটি ফ্লাইট উড্ডয়নের অপেক্ষায় ছিল। সেই ফ্লাইটের পাইলট লক্ষ্য করেন, আকাশে ওড়ার সময় অন্য উড়োজাহাজটির নিচ থেকে কিছু একটি পড়ে যাচ্ছে।
বিষয়টি তিনি দ্রুত ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এটিসি রুমে জানান। সেখান থেকে বিষয়টি জানানো হয় উড্ডয়নরত ফ্লাইটের পাইলট ক্যাপ্টেন জামিল বিল্লাহকে।
এরপর তিনি সাবধানতার সঙ্গে একপাশে ভারসাম্য রেখে জরুরি অবতরণে সফল হন। দুর্ঘটনাটি রাতের বেলায় হলে বা কেউ না দেখলে বড় ধরনের প্রাণঘাতী বিপর্যয় ঘটতে পারত।
বিমানের জনসংযোগ কর্মকর্তা রওশন কবীর জানিয়েছেন, প্রতিটি ফ্লাইটের আগে নির্ধারিত লাইসেন্সধারী ইঞ্জিনিয়ার দ্বারা ইন্সপেকশন করা হয় এবং তা না হলে ফ্লাইটের অনুমতি মেলে না। আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (আইকাও) এবং আয়াটার নিয়ম অনুসরণ করে বিমান পরিচালিত হয় বলে তিনি দাবি করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘উড়োজাহাজ চালাতে গেলে যান্ত্রিক ত্রুটি হতেই পারে। তবে তদন্তে যদি কারো গাফিলতি থাকে, সেটি নিশ্চিতভাবেই সামনে আসবে।’
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (১৬ মে) কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসার সময় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজের বাঁ পাশের একটি চাকা খুলে পড়ে যায়।
পাইলটের দক্ষতায় শাহজালাল বিমানবন্দরে উড়োজাহাজটি নিরাপদে অবতরণ করে এবং বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় ফ্লাইটটি।

 
                             
                                    -20250516203406.webp)
 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন