জাতীয় না স্থানীয়- আগে কোন নির্বাচন হবে তা নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যেই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। বিশেষ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ঘিরে চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা, নাগরিক সেবা ব্যাহত হওয়া এবং মেয়র ইশরাক হোসেনের শপথ ঘিরে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
সরকারি সূত্র জানিয়েছে, ঢাকার দুই সিটির নাগরিক সেবা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হওয়ায় সংকট নিরসনে স্থানীয় সরকার বিভাগ নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) চিঠি দিতে যাচ্ছে। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪ অনুযায়ী মেয়র পদ শূন্য হওয়ায় নতুন নির্বাচন আয়োজনই সংকট সমাধানের একমাত্র পথ বলে মনে করছে সরকার।
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ মার্চ একটি নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল রায় দেয়। এরপর নির্বাচন কমিশন ২৭ এপ্রিল তাকে মেয়র হিসেবে গেজেট প্রকাশ করে। কিন্তু শপথ অনুষ্ঠানের তারিখ ঘোষণায় বিলম্ব হওয়ায় আন্দোলনে নামে ইশরাক সমর্থকরা।
নগর ভবনে তালা লাগিয়ে দেওয়ার ফলে গত কয়েকদিন ধরে দক্ষিণ সিটির সব ধরনের নাগরিক সেবা বন্ধ রয়েছে। আটটি আঞ্চলিক অফিসও কার্যত অচল। প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া জানান, সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। নাগরিকদের কোনো সেবা দিতে পারছি না।
গেজেট প্রকাশের এক দিন পর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা রায়ের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ দেন। এরপর রিট দায়ের করা হয়, যার শুনানি শেষে হাইকোর্ট বৃহস্পতিবার আদেশ দেবে। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ জানিয়েছেন, মেয়াদ ও আইনগত জটিলতা রয়েছে। এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত সেখান থেকেই হবে।
জাতীয় না স্থানীয়: কোন নির্বাচন আগে?
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সদস্য আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, কোন নির্বাচন আগে হবে- এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। কমিশন শুধু বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকবে।
এদিকে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও তা নির্দলীয়ভাবে আয়োজনের সুপারিশ করলেও বিএনপি ও সমমনা দলগুলো জাতীয় নির্বাচন আগে চায়। তারা ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে সরকারকে চাপ দিচ্ছে।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস ডিএসসিসিতে এবং আতিকুল ইসলাম ডিএনসিসিতে মেয়র নির্বাচিত হন। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দুদিন আগে তাপস দেশ ত্যাগ করেন এবং আতিকুল ইসলাম গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন। গত ১৯ আগস্ট দুই সিটির মেয়র পদ শূন্য ঘোষণা করে সরকার প্রশাসক নিয়োগ দেয়। নিয়ম অনুযায়ী তাদের মেয়াদ শেষ হয়েছে ১৫ মে, ২০২৫।
ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা শপথের দাবিতে অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সিটি নির্বাচন দাবিতে ইসির সামনে বিক্ষোভ করেছে। এনসিপির নেতা সারোয়ার তুষার অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশন ইশরাকের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল না করে গেজেট প্রকাশ করে অদ্ভুত আচরণ করেছে।
সরকার বলছে, সংকট সমাধানে দ্রুত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে। তবে আইনি ও রাজনৈতিক চাপের মধ্যে কোন পথে যাবে সরকার- তা নির্ভর করছে আদালতের আদেশ এবং আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের ওপর।

 
                             
                                    
 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                    -20251031160223.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
       -20251031190935.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন