সাংবাদিক মুন্নি সাহা, তার স্বামী কবির হোসেন এবং স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ৩৫টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। এসব হিসাবে বর্তমানে জমা রয়েছে প্রায় ১৮ কোটি ১৬ লাখ টাকা। অভিযোগ, সাংবাদিকতার আড়ালে প্রতারণা, চাঁদাবাজি ও মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে এই বিপুল অর্থ অর্জন করা হয়েছে।
আজ একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানায় সিআইডি। প্রাথমিক অনুসন্ধান অনুযায়ী, মুন্নি সাহা ও তার স্বামী কবির হোসেন সাংবাদিকতা পেশার প্রভাব কাজে লাগিয়ে বেআইনিভাবে অর্থ উপার্জন করেছেন। সেই অর্থ তাদের নিজস্ব ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত একাধিক ব্যাংক হিসাবে লেনদেন করেছেন। বিষয়টি সিআইডির নজরে এলে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা, ২০১৯ অনুসারে অনুসন্ধান শুরু করে ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
অনুসন্ধানকালে দেখা যায়, মুন্নি সাহা, কবির হোসেন এবং তাদের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে মোট ৪৬টি ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ৩৫টি হিসাব সক্রিয় রয়েছে। এসব ব্যাংক হিসাব ঘেঁটে দেখা গেছে, হিসাব খোলার পর থেকে নানা সময়ে এসব হিসাবে মোট লেনদেন হয়েছে একশত ছিয়াশি কোটি ছাপান্ন লাখ একানব্বই হাজার আট টাকা। এই লেনদেনগুলোকে সন্দেহজনক বিবেচনায় নিয়ে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট আদালতে আবেদন করলে সিনিয়র স্পেশাল জজ, মহানগর দায়রা জজ, ঢাকা ৩৫টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার আদেশ দেন।
এই নির্দেশনার পর সিআইডি আনুষ্ঠানিকভাবে ৩৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করে, যেখানে বর্তমানে জমা রয়েছে ১৮ কোটি ১৬ লাখ ৫৩ হাজার ৭৩৯ টাকা। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে সিআইডি একপ্রকারে একটি সম্ভাব্য প্রভাবশালী প্রতারণা চক্রের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে লাগাম টানার চেষ্টা করছে।
এই মুহূর্তে মুন্নি সাহা ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা অনুযায়ী অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, অনুসন্ধান শেষে বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করে আদালতে উপস্থাপন করা হবে। এদিকে বিষয়টি ঘিরে মিডিয়া অঙ্গনে চলছে নানা গুঞ্জন। কেউ কেউ বলছেন, এই ঘটনা দেশের গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতার ওপরও বড় রকমের আঘাত হানতে পারে।
এ বিষয়ে সিআইডির মিডিয়া শাখার পক্ষ থেকে বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তদন্তের স্বার্থে আরও কিছু নতুন তথ্য পর্যবেক্ষণে রয়েছে এবং প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সংশ্লিষ্টদের তলব করা হতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :