নির্বাচিত সরকারের কোনো দায়িত্ব নিতে ‘আগ্রহী’ নন বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে পরবর্তী সরকারের কাছে সুষ্ঠুভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করাই তার সরকার লক্ষ্য বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (১১ জুন) লন্ডনের চ্যাথাম হাউসে রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সে আয়োজিত এক সংলাপে এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টারাও আগ্রহী হবেন না: ড. ইউনূস
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস বলেন, ‘কোনোভাবেই না, একেবারেই না। আমি মনে করি, আমাদের উপদেষ্টা পরিষদের কোনো সদস্য সেটা করতে আগ্রহী হবেন না।’
‘নির্বাচনের পর নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব নেবে- এই বিষয়ে আমাদের কোনো সংশয় নেই। আমাদের দায়িত্ব শুধু একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা,’ বলেন তিনি।
ড. ইউনূস আরও বলেন, তাদের দায়িত্ব হল- যে রূপান্তর চলছে সেটা ঠিকমত শেষ করা এবং যখন তারা নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন, তখন জনগণ যেন সন্তুষ্ট থাকে।
‘আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে নির্বাচনটি সঠিকভাবে সম্পন্ন হবে। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।’
ঘোষিত সময়েই নির্বাচন: ড. ইউনূস
ড. মুহাম্মদ ইউনূস এও আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ‘ঘোষিত সময়েই’ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
‘১৭ বছর পর একটি সুন্দর, অংশগ্রহণমূলক ও ইতিহাসগঠক নির্বাচন হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
এসময় সংস্কার কমিশন গঠনের বিষয়েও কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
‘প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা কমিশন গঠন করেছি। এখন তাদের সুপারিশের অপেক্ষায় আছি। আমাদের প্রধান লক্ষ্য সব দলের মধ্যে ঐকমত্য তৈরি করা,’ বলেন তিনি।
এখন প্রয়োজন নতুন সভ্যতা গঠন: ড. ইউনূস
সংলাপে জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক সংকট প্রসঙ্গও টানেন প্রধান উপদেষ্টা।
‘আমরা একটি ভুল সভ্যতার অংশ হয়ে গেছি, যা আত্মবিধ্বংসের পথে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন নতুন সভ্যতা গঠন। যেখানে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামানো হবে, বেকারত্ব থাকবে না এবং ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী প্রতিষ্ঠা করা হবে।’
‘এটি শুধু কোনো জ্ঞানগত বিষয় নয়, বরং বাস্তবিক পরিবর্তনের জন্য এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে,’ যোগ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
এই সংলাপে যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য দেশের কূটনীতিক, গবেষক এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সংলাপে ড. ইউনূস বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন, রাজনৈতিক পরিবেশ এবং শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।