বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় শরীরের পুরো অংশ পুড়ে গেছে এক মেয়ে শিক্ষার্থীর। এমতাবস্থায় মেয়েকে চিকিৎসাধীন হাসপাতালের কক্ষের সামনে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে আর্তনাদ করছিলেন মা ইয়াসমিন আক্তার।
তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ের সব পুড়ে গেছে, তোমরা কেউ তার জ্বালা বন্ধ করো। আমি আমার মেয়ের কষ্ট সহ্য করতে পারছি না। আমার বুকটা খালি হয়ে যাচ্ছে।’
সোমবার (২১ জুলাই) বিকেলে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের তৃতীয় তলার কক্ষের বাইরে এভাবে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
তিনি জানান, তার দুই ছেলে-মেয়ে। মেয়ে মাইলস্টোনে পড়ে।
মায়ের পাশে বসে থাকা ছেলে তাহমিন ইসলাম রোহান বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো আজকেও বোনকে স্কুল থেকে আনতে যাই। গিয়ে দেখি স্কুলে বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। পরে ক্লাসরুমে গিয়ে খুঁজে দেখি, বোনকে পাচ্ছি না। পরে ভেতর থেকে তাকে খুঁজে বের করে দেখি, বোনের শরীর পুড়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরে সঙ্গে সঙ্গে তাকে উত্তরার লুবনা হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে পরে ঢাকা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসি।’
এর আগে দুপুর ১টার পর রাজধানীর উত্তরায় দুর্ঘটনায় পড়ে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান। বিমানটি উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে গিয়ে পড়ে এবং বিধ্বস্ত হয়।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, বিমানটি ছিল বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজিআই মডেলের একটি প্রশিক্ষণ বিমান, যা দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়ন করে।
এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। ঘটনায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ১২০ জন দগ্ধ হয়েছেন। এদের মধ্যে ২৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় শোক জানিয়ে বার্তা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শোকবার্তায় তিনি বলেন, ‘বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় আমি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি।’
‘দুর্ঘটনায় বিমানসেনা ও মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক-কর্মচারীসহ অন্যান্যদের যে ক্ষতি হয়েছে, তা অপূরণীয়। জাতির জন্য এটি একটি গভীর বেদনার ক্ষণ। আমি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি এবং সংশ্লিষ্ট হাসপাতালসহ সকল কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার নির্দেশ প্রদান করছি।’
আপনার মতামত লিখুন :