সোমবার, ২৮ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২৫, ১২:২৪ পিএম

আজ বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস

বাংলাদেশে হেপাটাইটিস সংক্রমণ ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে উঠছে

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২৫, ১২:২৪ পিএম

হেপাটাইটিস। প্রতীকী ছবি

হেপাটাইটিস। প্রতীকী ছবি

বাংলাদেশে হেপাটাইটিস সংক্রমণ ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বে উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম।  প্রথমে রয়েছে চীন এবং দ্বিতীয় ভারত। 

ভাইরাস হেপাটাইটিস, লিভারের প্রদাহ যা গুরুতর লিভারের রোগ এবং লিভার ক্যানসারের কারণ, সে সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে প্রতি বছর ২৮ জুলাই বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস পালন করা হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৩ লাখ মানুষের মৃত্যু হয় হেপাটাইটিস সি সংক্রমণের কারণে।  আর দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ প্রভাবিত করে প্রায় ৫ কোটি ৮০ লাখ মানুষকে।

বাংলাদেশে হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসে প্রায় ৮৩ লাখ মানুষ আক্রান্ত। এর মধ্যে ৮৬.৭৪ শতাংশ হেপাটাইটিস বি ও ১৩.২৬ শতাংশ হেপাটাইটিস সি ভাইরাসে আক্রান্ত।

হেপাটাইটিস হচ্ছে লিভারে প্রদাহ। এটা ভাইরাসের জন্য হয়ে থাকে। হেপাটাইটিসের ‍এ, বি, সি, ডি এবং ই—এই পাঁচ ভাইরাস রয়েছে।  এর মধ্যে ৯০ শতাংশের মৃত্যুর কারণ হলো হেপাটাইটিস-বি এবং সি ভাইরাস। দীর্ঘমেয়াদি হেপাটাইটিসে আক্রান্ত রোগীর লিভার সিরোসিস, ক্যানসার ও লিভার বিকল হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

বাংলাদেশে হেপাটাইটিস সি আক্রান্তের সাধারণ প্রাদুর্ভাবের হার ০ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ১ শতাংশের মধ্যে বলে অনুমান করা হয়। তবে একটি নির্দিষ্ট গবেষণায়, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে ১৩ দশমিক ২ শতাংশ এবং অন্তঃসত্ত্বা রোহিঙ্গা নারীদের মধ্যে ৮ শতাংশের সংক্রমণের হার অনেক বেশি বলে দেখা গেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নজরদারিতে।  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, এই হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি, যা বাংলাদেশের স্থানীয় জনসংখ্যার তুলনায় প্রায় দশগুণ এবং সাধারণ অভিবাসী জনগোষ্ঠীর ৪ দশমিক ১ শতাংশের তুলনায় তিনগুণ বেশি।

আইইডিসিআর’র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রথম হেপাটাইটিস-ই’র প্রাদুর্ভাব দেখা যায় ২০০৮ সালে।  সে সময় সাভারের পূর্ব আরিচপুরে ৪ জন অন্তঃসত্ত্বা আকস্মিক জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এর কারণ উদ্ঘাটনে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এবং আইসিডিডিআর,বি’র সদস্যদের নিয়ে একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়।  দলটি ৪ হাজার ৭৫১ জন সন্দেহভাজন হেপাটাইটিস-ই রোগীর সন্ধান পায়, যাদের মধ্যে ১৭ জন মৃত রোগীও ছিল।  তাদের ৭৩ জনের রক্ত পরীক্ষা করে ৫৬ জন (৭৭ শতাংশ)-এর রক্তে অ্যান্টি এইচইভি-আইজিএম (হেপাটাইটিস শনাক্ত করার বিশেষ উপাদান) পাওয়া যায়। নারী এবং বিশেষ করে যারা প্যারাসিটামল (এসিটামিনোফেন) জাতীয় ওষুধ গ্রহণ করেছিল, তাদের মধ্যে মৃত্যুর হার বেশি ছিল। এরপর ২০১৩ সালে নোয়াখালীতে, ২০১৭ সালে রাজশাহীতে, ২০১৮ সালে চট্টগ্রামে হেপাটাইটিস ‘ই’ রোগী পাওয়া যায়। 

বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস’ উদযাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।  দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য- ‘লেটস ব্রেক ইট ডাউন’, যা হেপাটাইটিস নির্মূলের লক্ষ্য অর্জনে তাৎপর্যপূর্ণ হয়েছে বলে আমি মনে করি। লিভার রোগ সম্পর্কে অজ্ঞতা, সময়মতো চিকিৎসা না করা এবং বিদ্যমান নানা কুসংস্কারের কারণে বাংলাদেশে লিভার রোগের প্রকোপ দিন দিন মারাত্মক আকার ধারণ করছে।  বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিবেদন মতে, বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় ৪ দশমিক ৪ শতাংশ হেপাটাইটিস ‘বি’ এবং শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ হেপাটাইটিস ‘সি’ ভাইরাসে আক্রান্ত।  দেশে প্রতি বছর বহু মানুষ হেপাটাইটিস, লিভার সিরোসিস, লিভার ক্যানসার এবং লিভার ফেইলিওরের মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন।”

তিনি আরও বলেন, ‘আশার কথা, সচেতনতা ও সময়মতো সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এসব রোগ প্রতিরোধ এবং সুস্থ ও দীর্ঘ জীবনযাপন সম্ভব। জনগণের দোরগোড়ায় সুলভ ও মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে স্বাস্থ্য খাতের টেকসই সংস্কারে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বদ্ধপরিকর। সরকার সারা দেশের হাসপাতালগুলোর মান ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বিনা মূল্যে স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ ও পুষ্টিসেবা প্রদান কার্যক্রম জোরদার করার উদ্যোগ নিয়েছে।  জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মোবাইল ফোন ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা চালু করা হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী হেপাটাইটিস নির্মূলের যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে তা বাস্তবায়নে সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তবে এ লক্ষ্য অর্জনে সবার সমন্বিত প্রচেষ্টার বিকল্প নেই। নীরব ঘাতক হেপাটাইটিস প্রতিরোধে আমি দেশের সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন, গণমাধ্যম, অভিভাবকসহ সচেতন নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।’

বাংলাদেশ হেপাটোলজি সোসাইটির তথ্যমতে, দেশে প্রায় ১ লাখ মানুষ হেপাটাইটিস ‘বি’ বা ‘সি’-এ আক্রান্ত।  কিন্তু তাদের ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই জানেন না তারা এই রোগে আক্রান্ত।

হেপাটাইটিস রোগ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে ২০০৮ সালের ২৮ জুলাই সর্বপ্রথম বিশ্ববাসীকে সচেতন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস অ্যালায়েন্স’ দিনটিকে হেপাটাইটিস দিবস হিসেবে পালনের উদ্যোগ নেয়।  ২০১১ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দিবসটিকে স্বীকৃতি দেয়। এরপর থেকে বিশ্বের প্রতিটি দেশে প্রতি বছর ২৮ জুলাই দিবসটি পালন করা হয়। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও হেপাটাইটিস দিবস পালন করা হবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!