শুল্কছাড় পেতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন গম কেনার অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। বুধবার (৩১ জুলাই) অন্তর্বর্তী সরকারের বরাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে সরকার পর্যায়ে এই চুক্তি হয়েছে। এতে প্রতি টনের দাম ধরা হয়েছে ৩০২ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলার (৩৭ হাজার ১২৭ টাকা)।
রয়টার্স বলছে, বাংলাদেশের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক এবং বাণিজ্যিক উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা হিসেবে এই উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এই গমের সরবরাহ হবে সিঙ্গাপুরভিত্তিক একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে।
এর আগে জুলাইয়ের শুরুতে আগামী পাঁচ বছরে আমেরিকা থেকে বার্ষিক ৭ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির জন্য একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে সরকার।
রয়টার্স বলছে, এতদিন কৃষ্ণসাগর দিয়ে কম খরচে কমদামি গম আমদানি করে আসছে বাংলাদেশ। এবার মিশ্রণের জন্য আমেরিকা ও কানাডার মতো দেশ থেকে কম পরিমাণ উচ্চমানের গম আমদানি করছে সরকার। ট্রাম্প প্রশাসন ইউএসএআইডি বন্ধ করে দেওয়ার আগে আমেরিকা থেকে অনুদান হিসেবে গম ও অন্যান্য খাদ্যশস্য পেয়ে আসছিল বাংলাদেশ।
এর আগে ট্রাম্প হুমকি দিয়ে বলেন, ৬০০ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে না পারলে আগামী ১ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পিত ৭ লাখ মেট্রিক টন গম ক্রয় সেই ঘাটতি সামান্যই কমাবে।
তবে মার্কিন রপ্তানি বিষয়ক সংস্থা ইউএস হুইট অ্যাসোসিয়েটসের বৈদেশিক কার্যক্রমের ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্রায়ান লিডল বলছেন, এই চুক্তির ফলে তারা এখন অন্য দেশের চিন্তাও করছেন, যেসব দেশ শুল্ক কমাতে মার্কিন পণ্য কেনার সিদ্ধান্ত নেবে।
লিডল বলেন, তারা এশিয়া এবং আফ্রিকার অন্যান্য দেশগুলোর সাথেও একই ধরণের চুক্তি করতে চাইছে, যারা আগে মার্কিন গম এবং অন্যান্য ধরণের মার্কিন খাদ্য সহায়তা পেয়ে আসছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা সেই চাহিদার অনেকটাই আরও সরাসরি ও টেকসই বাণিজ্যিক ব্যবসা দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে চাইছি।’
গত ২৭ জুলাই মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনার অর্ডার দেয় বাংলাদেশ সরকার। এ ছাড়া অন্যান্য মার্কিন পণ্য কেনার উদ্যোগও বাড়ানো হয়। এ ছাড়া বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা করতে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল এখন আমেরিকায় রয়েছে।