কাজ শেষ হওয়ার পর ভোররাতে পূর্বাচলের নীলা মার্কেটে হাঁসের মাংস খেতে যান স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তবে তখন নীলা মার্কেট বন্ধ থাকলে তিনি গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেল-এ যান।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘রাতে যখন আমার কাজ শেষ হয়ে যায় কখনো কখনো ভোর হয়ে যায়, ওই সময় আসলে বাসায় খাবারদাবার দেওয়ার মতো কেউ থাকে না। আমি বেশির ভাগ সময়ই ৩০০ ফিটে নীলা মার্কেট নামে একটা জায়গায় আছে, সেখানে যাই। সেখানে হাঁসের মাংস খুব ভালো পাওয়া যায়, সেখানে আমরা চার-পাঁচজন মিলে যাই।’
তিনি বলেন, ‘ওইটা আবার বেশি ভোর হয়ে গেলে বন্ধ থাকে। তখন ওদিকে ওয়েস্টিনে যাওয়া হয়। তবে এক্সাক্ট ওই দিন আমি গিয়েছিলাম কি না, সেখানে ছিলাম কি না, সেটা আমি বলতে পারব না।’
ওয়েস্টিনে যাওয়ার দিনটি ১৭ জুলাই উল্লেখ করে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজে হেলমেট পরা কাউকে যদি আমার বলে দাবি করা হয়, এটি কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য, আমি বলতে পারব না। এ বিষয়ে আমি বেশি কিছু বলতে চাই না, কারণ এটি এখনো তদন্তাধীন।’
চাঁদাবাজির অভিযোগ নিয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এর সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। আমার মনে হয় না এখনো কেউ এ রকম প্রমাণ দিতে পেরেছেন যে আমার সম্পৃক্ততা আছে। বরং যার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে, সেই সাক্ষাৎকার একজন রাজনৈতিক নেতার বাসায় জোরপূর্বক নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এটি অত্যন্ত গুরুতর এবং পরিবারের পক্ষ থেকে এসেছে। এ ধরনের বিষয় সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘জানে আলম আপুকে আমি চিনতাম, যখন ছাত্র অধিকার পরিষদে ছিলাম, ২০২২ সালে যখন আমরা ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। সেও ছাত্র অধিকার পরিষদ করত, সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটিতে প্রথমে ছিল, তখন চিনতাম। কিন্তু ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর তার সঙ্গে আমার কোনো কথা বা দেখা হয়নি।’
উপদেষ্টা বলেন, এ ধরনের একটা অভিযোগ আসার পর আমরা আরও এক জায়গা থেকে জানতে পারলাম, আজকে (বৃহস্পতিবার) তার স্ত্রী পরিচয়ে একজন সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনি সেখানে দাবি করেছেন, অপুকে গুম করে এ স্টেটমেন্ট (চাঁদাবাজিতে আসিফকে জড়িয়ে বক্তব্য) আদায় করা হয়েছে। এ রকম কিছু যদি হয়ে থাকে, তবে সেটা আসলেই অত্যন্ত শঙ্কাজনক।’
গুলশানে সাবেক একজন এমপির বাসায় চাঁদা আদায়ের ঘটনায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ৩৫ মিনিটের ওই ভিডিওতে ঘটনার আদ্যোপান্ত বর্ণনা করেছেন তিনি।
অপু বলেন, ‘গুলশানে চাঁদাবাজির ঘটনায় টাকার ব্যাগ নিতে যে ছেলেকে দেখেছেন, সেটা আমি। আপনারা একটি ফুটেজের মাধ্যমে দেখেছেন যে সমন্বয়কেরা চাঁদাবাজিতে জড়িত। যে সমন্বয়ক গত বছর ছিল মহানায়ক, তারা হয়ে গেল চাঁদাবাজ। আমার কিছু প্রশ্ন আছে।’
আপনারা কি জানেন, ‘ওই দিন ভোর ৫টার সময় ওই জোনের ডিসি-এসিকে অবগত করে একদম অফিশিয়াল প্রসেসে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে শাম্মীর (সাবেক এমপি) বাসায় আমরা অভিযান চালাই? আপনারা কি জানেন, সেই অভিযানে যাওয়ার আগে গুলশানের কোনো একটি জায়গায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সঙ্গে আমার কথা হয়?’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন