ঢাকা রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫

যুগোপযোগী প্রশিক্ষণে আনসার বাহিনীকে গড়ে তোলা হচ্ছে: মহাপরিচালক

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২৫, ০৭:২৩ পিএম
আনসার বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। ছবি- সংগৃহীত

নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে আনসার বাহিনীকে গড়ে তোলা হচ্ছে যুগোপযোগী প্রশিক্ষণে বলে জানিয়েছেন বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ।

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর আনসার, এপিসি ও পিসি সদস্যদের সতেজকরণ প্রশিক্ষণ (৫ম ধাপ), ২০২৫ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্জিত দক্ষতা দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নিরাপত্তায় নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

শনিবার (২৩ আগস্ট) গাজীপুরের সফিপুরে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি একাডেমিতে অনুষ্ঠিত সমাপনী অনুষ্ঠানে মহাপরিচালক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ বলেন, ‘আনসার বাহিনীর সদস্যদের শুধু সংখ্যাগত উপস্থিতি নয়, বরং নিরাপত্তা সেবার গুণগত মান উন্নয়নের লক্ষ্যেই এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। গ্রামীণ জনপদ থেকে শুরু করে শহরের প্রতিটি ওয়ার্ড পর্যন্ত নিরাপত্তা ও আর্থসামাজিক উন্নয়নের অঙ্গীকার নিয়ে এই বাহিনী কাজ করছে। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বাহিনী ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রেখেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আনসার বাহিনী চারটি স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত। ভিডিপি/টিডিপি, উপজেলা/থানা আনসার, অঙ্গীভূত  আনসার ও ব্যাটালিয়ন আনসারের দায়িত্ব ভিন্ন হলেও দেশের সার্বিক নিরাপত্তায় প্রতিটি সাংগঠনিক কাঠামোই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাটালিয়ন আনসার দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর সাথে দায়িত্ব পালন করছে, আর অঙ্গীভূত আনসার সদস্যরা পয়েন্ট সিকিউরিটিতে কেপিআই ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করছে। তারা সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে, যা দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে অপরিহার্য। উপজেলা আনসার সদস্যদের মিশন ও দায়িত্ব পরিধি অনুযায়ী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীন নিরাপত্তা ও প্রান্তিক আয়োজনে জোরালো ভূমিকা রাখছে। ভিডিপি/টিডিপি সদস্যরা সামাজিক আন্দোলন ও সচেতনতামূলক কার্যক্রমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা হুমকির উৎস মুলে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখতে বদ্ধপরিকর।’

তিনি সতেজকরণ প্রশিক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘রাষ্ট্রের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ বাহিনী গড়ে তুলতে যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। সমাজ ও মানুষের প্রয়োজনের সাথে এই বাহিনী সরাসরি সম্পৃক্ত। তাই কোনো অদক্ষ সদস্য এ বাহিনীতে স্থান পাবে না। নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আনসার বাহিনীকে যুগোপযোগী করে গড়ে তোলা হবে। বিশেষ করে কেপিআই নিরাপত্তায় এ প্রশিক্ষণ নতুন মাত্রা যোগ করবে।’ 

এবারের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ১০ আগস্ট থেকে ২৩ আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি একাডেমি, সফিপুর, গাজীপুরে অনুষ্ঠিত হয়। এতে মোট ১,১৬০ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে ১,১৩৬ জন সফলভাবে প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করেন।

প্রশিক্ষণকালীন সময়ে মৌলিক শরীরচর্চা, অস্ত্র ও সাধারণ ড্রিল, শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, দায়িত্ব ও শৃঙ্খলা, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, সংগঠন ও বিধি-বিধান, সামাজিক সচেতনতা, মাদকবিরোধী কার্যক্রম, নারী ও শিশুর সুরক্ষা, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ এবং সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক শিক্ষা প্রদান করা হয়।

মহাপরিচালক অতীতের অবদান স্মরণ করে বলেন, ‘৫ আগস্ট যখন সারা দেশ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলো এবং অনেক থানাই অরক্ষিত হয়ে পড়েছিল, তখন আনসার বাহিনীর সদস্যরা সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সমাজ ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল। জনগণের আকাঙ্খা পূরণে আগামীতে আনসার ভিডিপি সদস্যরা আস্থার স্বাক্ষর রাখতে সুপ্রশিক্ষিত ও সক্ষমতা অর্জন করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।’ 

অনুষ্ঠানের শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করা হয়।

এ ছাড়া প্রশিক্ষণে বিশেষ কৃতিত্বের জন্য তিনজনকে পুরস্কৃত করা হয়- তরিকুল ইসলাম, মো. বারিক এবং মাইনুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ, উপ-মহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো. রফিকুল ইসলাম, একাডেমি কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ নুরুল আবছারসহ বাহিনীর বিভিন্ন পদবীর কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।