ঢাকা বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫

মসজিদ ও মন্দিরকে এক হাজার ১ টাকায় জমি দিল রেলওয়ে

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২৫, ০৪:০৭ পিএম
রেলভবনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট তিনটি উপাসনালয়ের পরিচালনা কমিটির হাতে বরাদ্দপত্র তুলে দেন রেলওয়ে। ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকার জোয়ার সাহারা মৌজায় অবস্থিত দুটি মসজিদ ও একটি মন্দিরকে প্রতীকী মূল্যে জমি হস্তান্তর করেছে। প্রতিটি ধর্মীয় উপাসনালয়কে মাত্র ১০০১ টাকা করে, অর্থাৎ মোট ৩০০৩ টাকার বিনিময়ে এই জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। রেলওয়ের ইতিহাসে এই প্রথম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে জমি হস্তান্তরের এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হলো।

বুধবার (২৭ আগস্ট) রেলভবনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঢাকার বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মো. মহিউদ্দিন আরিফ সংশ্লিষ্ট তিনটি উপাসনালয়ের পরিচালনা কমিটির হাতে বরাদ্দপত্র তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।

জমি বরাদ্দ পাওয়া তিনটি প্রতিষ্ঠান হলো: খিলক্ষেত রেলওয়ে জামে মসজিদ (০.২০১১ একর বা ৮,৭৬০ বর্গফুট), আন-নূর জামে মসজিদ (০.০৫৫২ একর বা ২,৪০৫ বর্গফুট) এবং খিলক্ষেত সর্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির (০.০৫৬২ একর বা ২,৪৫০ বর্গফুট)। সব মিলিয়ে মোট প্রায় ৩১ শতাংশ জমি হস্তান্তর করা হয়েছে এই তিনটি ধর্মীয় উপাসনালয়কে।

অনুষ্ঠানে ধর্ম উপদেষ্টা ড. খালিদ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রোল মডেল। রেলওয়ের এই উদ্যোগ সেই সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ।’

তিনি আরও বলেন, ‘ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা উপাসনালয়কে যারা অপবিত্র করার চেষ্টা করে, তারা কোনো ধর্মের প্রতিনিধি নয়, তারা দুষ্কৃতকারী।’

তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের বেদখল হয়ে যাওয়া দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধারে সহযোগিতার আশ্বাসও দেন।

রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। কেউ যদি এই সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করে, তাহলে তাকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না এবং তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে রেলওয়ের জমি বরাদ্দ পেতে হলে বাজার মূল্যে তা নিতে হবে।

প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম জানান, ‘রেলওয়ের আইনে আগে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে জমি বরাদ্দ দেওয়ার কোনো বিধান ছিল না। তবে আইন সংশোধন করে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যাতে মুসলিম ও হিন্দু উভয় সম্প্রদায়ের উপাসনালয় স্থায়ীভাবে তাদের ব্যবহৃত জমি পায়।’