আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিতে পারবে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।
সানাউল্লাহ বলেন, কোনো দলের কার্যক্রম স্থগিত থাকলে তাদের দলীয় প্রতীকও স্থগিত থাকবে, ফলে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তবে প্রতীক ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণের বিষয়টি সময়ের ওপর নির্ভর করবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার না হলে তারা দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। যদিও দলের নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি, তবে স্থগিত থাকা যেকোনো দলের বিষয়ে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট।’
উল্লেখ্য, চলতি বছরের মে মাসে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত করেছে।
নির্বাচন কমিশনার জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের মাধ্যমে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার তালিকায় সশস্ত্র বাহিনী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনও আনা হয়েছে।
নতুন নিয়মাবলি এবং শর্তাবলি
- জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ভোটকেন্দ্র স্থাপন করবেন।
- আদালত কর্তৃক ফেরারি ঘোষিত প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
- লাভজনক পদে যারা আছেন বা সরকারি ৫০ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ার রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানে কাজ করলে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
- প্রার্থী যদি হলফনামায় তথ্য গোপন বা মিথ্যা তথ্য দেন, ইসি পরে ব্যবস্থা নিতে পারবে এবং সেই প্রার্থী সংসদ সদস্য পদ হারাবেন।
- প্রার্থীর জামানত ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে।
- একক প্রার্থী থাকলে সেই আসনে ব্যালেটে ‘না’ ভোট থাকবে।
- জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন হলেও প্রার্থীরা নিজ নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করবেন।
- ইভিএম সংক্রান্ত সব বিধান বাতিল করা হয়েছে।
- মিডিয়ার ব্যক্তিরা ভোট গণনায় উপস্থিত থাকতে পারবেন।
- নির্বাচনী পোস্টার ব্যবহার নিষিদ্ধ।
- সোশ্যাল মিডিয়ায় আচরণবিধি ভঙ্গ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
- কার্যক্রম নিষিদ্ধ কোনো দলের নিবন্ধন স্থগিত থাকবে এবং তাদের প্রতীক সংরক্ষিত থাকবে।
নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত
ইসি সানাউল্লাহ বলেন, ‘এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে যাতে নির্বাচন প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ হয়। একক প্রার্থী থাকলেও ভোটারদের কাছে বিকল্প ‘না’ ভোট থাকায় ভোট প্রক্রিয়ায় গণতান্ত্রিক বিকল্প নিশ্চিত হবে। এ ছাড়া ভোটের মাঠে মিডিয়া ও পর্যবেক্ষকরা অংশগ্রহণ করতে পারলে প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা আরও নিশ্চিত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী যাতে ভোট প্রক্রিয়ায় অনিয়ম করতে না পারে, সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে ভোটের গ্রহণযোগ্যতা এবং জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পাবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন