ঢাকা শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান ও তহবিল নিশ্চিতের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫, ০১:৩৭ এএম
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি- সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান ও তহবিল বৃদ্ধির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে ভাষণে তিনি বলেন, তহবিল সংকটের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ন্যূনতম জীবনমান বজায় রাখার যৌথ প্রয়াস ভঙ্গুর হয়ে উঠেছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) ইতোমধ্যে সতর্ক করেছে যে, নতুন তহবিল না এলে রোহিঙ্গাদের মাসিক রেশন অর্ধেকে নেমে মাথাপিছু মাত্র ৬ ডলারে দাঁড়াবে, যা অনাহার ও অপুষ্টির ঝুঁকি বাড়াবে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিদ্যমান তহবিলের বাইরে নতুন ও বর্ধিত তহবিল নিশ্চিত করতে হবে এবং মিয়ানমার সরকার ও রাখাইনের অন্যান্য অংশীদারদের ওপর ইতিবাচক পরিবর্তন ও দ্রুত রাজনৈতিক সমাধানের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে হবে।

মিয়ানমারে চলমান সংঘাতকে ‘আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য গভীর উদ্বেগজনক’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, এর ফলে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসন কঠিন হয়ে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, আট বছর পার হলেও সংকটের কোনো সমাধান হয়নি, বরং বাংলাদেশ ক্রমাগত মিয়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বাধ্য হচ্ছে।

তিনি সতর্ক করে বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রান্তিকীকরণের প্রক্রিয়া আর চলতে দেওয়া যাবে না। বৈষম্যমূলক নীতি ও কর্মকাণ্ডের প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা এখনই গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি রাখাইনের সমস্যাগুলোর চূড়ান্ত রাজনৈতিক সমাধান প্রয়োজন, যেখানে সংশ্লিষ্ট সব জাতিসত্তার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে, যেন রোহিঙ্গারা নাগরিকত্ব ও সমঅধিকার ভোগ করতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, ‘রোহিঙ্গারা এই সংকটের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী, আর তাদের পরেই বৃহত্তম ভুক্তভোগী বাংলাদেশ। তবে এটি বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের কোনো দ্বিপাক্ষিক বিষয় নয়; বরং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বিত দায়িত্ব।’

তিনি অন্য প্রতিবেশী দেশগুলোকে তাদের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, রাখাইনে স্থিতিশীলতা আনতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যেকোনো যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ অংশ নিতে প্রস্তুত।

আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য উচ্চপর্যায়ের রোহিঙ্গা সম্মেলন প্রসঙ্গে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, এ সম্মেলন বিশ্বব্যাপী দৃঢ় সংকল্প তৈরি করবে, তহবিল সংগ্রহকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেবে এবং একটি রোডম্যাপ ও সময় নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান সম্ভব হবে।