ঢাকা শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

‘দায়িত্ব ছেড়ে যাওয়ার আগে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রেখে যাব’

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫, ০৭:০২ পিএম
খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। ছবি- সংগৃহীত

আমাদের একটা পরিকল্পনা আছে আমরা যতদিন থাকবো, ততদিন দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করবো। আগামী মধ্য ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব ছেড়ে যাওয়ার আগে সে সময়ে যে পরিমাণ খাদ্য মজুদ থাকা উচিত, এর চেয়ে বেশি ছাড়া কম রেখে যাবো না। পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রেখেই আমরা যাবো এবং সেইভাবে আমরা পরিকল্পনা সাজানো  হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। 

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে খাদ্য বান্ধব এবং ওএমএস কর্মসূচি বিষয়ক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। 

আলী ইমাম মজুমদার বলেন, এখনো আমাদের প্রায় ১৬ লাখ টন চাল মজুদ আছে। গম মজুদ আছে প্রায় ১ লাখ টনের মতো। গমবাহী একটি জাহাজ বর্তমানে কুতুবদিয়া বহিঃনোঙ্গরে খালাসের জন্য অপেক্ষমান আছে। আমেরিকা এবং রাশিয়া থেকে দু’টি জাহাজ আসছে। আমেরিকা থেকে গম কেনার জন্য আরও চুক্তি করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এক পর্যায়ে চালের দাম বেড়েছিল, সেটা কমানোর জন্য সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ৫০ লাখ থেকে বাড়িয়ে বর্তমানে ৫৫ লাখ পরিবারকে প্র্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছে। আগে এই কর্মসূচি শুরু হতো সেপ্টেম্বর থেকে ৫ মাস। এখন শুরু হয়েছে আগস্ট থেকে ৬ মাস। এর মূল উদ্দেশ্যটা হচ্ছে এই মানুষগুলো তো বাজারে চাল কিনতে যাবে না। এতে বাজারে সরবরাহটা বাড়লো, এবং দামের উপর প্রভাব পড়বে। আমরা লক্ষ্য করছি সেই প্রভাবটা অলরেডি পড়েছে।  দামটা আরো কমলে আমিও খুশি হতাম, আপনারাও খুশি হতেন। কিন্তু যারা চাল উৎপাদন করেন তাদের আক্ষেপ আছে, তারা ন্যায্য মূল্যটা পাচ্ছে না। সেই দিকটাও আমাদেরকে দেখতে হবে। 

খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা কিন্তু গত  বোরো মৌসুমে আগের বারের চেয়ে দাম ৪ টাকা বাড়িয়েছি। সামনে আমন মৌসুমেও কৃষককে ইনসেনটিভ দেওয়ার জন্য সরকার কাজ করছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয় যদি না ঘটে, এবং ভালো ফলন যদি হয়, আমন মৌসুমে আমরা সর্বোচ্চ পরিমাণে ধান চাল ক্রয় করার চেষ্টা করবো। চালটা যাতে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি সংগ্রহ করা যায়, সেজন্য আমাদের নীতিমালায় কোন বিচ্যুতি আছে কিনা সেটা আমরা পুনরায় বিবেচনা করবো। 

তিনি বলেন, অবৈধ মজুদ দুই প্রকার হতে পারে, একটা হচ্ছে যদি লাইসেন্স না থাকে, এটাকে ধরা আইনত দায়িত্ব। আরেকটা হচ্ছে লাইসেন্স আছে, কিন্তু তার কতটুকু মজুদ করার ক্ষমতা আছে সেটা নির্ধারণ করা আছে। এর বাইরে যদি মজুদ করে সেটা ধরারও দায়িত্ব। এ ধরনের বাজার অস্থিতিশীল করার জন্য কেউ যদি অবৈধভাবে মজুদ করে আমাদেরকে জানাবেন, আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, প্রকৃতির সঙ্গে উৎপাদনের একটা সম্পর্ক আছে। এবার দেখেন সবজির দাম বেশি, ৮০ টাকার নিচে কিছু নেই। এটার কারণ হচ্ছে এবারের বৃষ্টিটা কিন্তু অনিয়মিতভাবে হচ্ছে। বৃষ্টি হলে কিন্তু শীতকালীন সবজি সব নষ্ট হয়ে যায়। এরপরও এখানে প্রশাসনের লোকজন আছেন, তারা যাতে বাজার মনিটরিংটা সঠিকভাবে করা হয়, যাতে সিন্ডিকেট বা চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অজুহাতে দাম বাড়াতে না পারে সেদিকে নজর দিতে হবে। 

জেলা প্রশাসন ও খাদ্য বিভাগের আয়োজনে মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন- চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড.  মো. জিয়াউদ্দিন।

এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবির।

সভায় চট্টগ্রামের খাদ্য বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, বিভিন্ন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।