অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, আমরা গত ১৫ মাস ধরে দায়িত্ব পালন করছি। আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে, আমরা আরও দুই-তিন মাস আছি। জাতি মূল্যায়ন করবে আমরা কী করতে পেরেছি, আর কী করতে পারিনি। তিনি আরও বলেন, ‘আমি এক টাকাও দুর্নীতি করিনি। সাড়ে আট কোটি টাকা হাজিদের ফেরত দিয়েছি। সৌদি আরবে এজেন্সিগুলোর ৩৯ কোটি টাকা আটকে ছিল, সেটিও দেশে এনে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বিতরণ করেছি।’
শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে দৈনিক নয়াদিগন্তের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
খালিদ হোসেন বলেন, ‘আমি একেবারে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে দায়িত্ব পালন করছি। বলা হচ্ছে, উপদেষ্টারা সেফ এক্সিট চান আমার কোনো সেফ এক্সিটের প্রয়োজন নেই। সহকর্মী ফাওজুল কবির খান বলেছেন, উপদেষ্টাদের বিষয়ে অর্ডিন্যান্স করা দরকার, যাতে পরবর্তী নির্বাচিত সরকারে আমরা টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে যোগ না দিই। আমি মনে করি, এমন অর্ডিন্যান্স হলে সেটি আরও ভালো হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে বলছেন, কয়েকজন উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন যাতে পরবর্তী সরকারে থাকতে পারেন। আমি স্পষ্ট করে বলি, যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক, তারা যদি আমাকে সম্মান জানিয়ে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হতে আমন্ত্রণও জানায়, আমি তাতে রাজি হব না।’
ধর্ম উপদেষ্টা জানান, ‘আমার মন্ত্রণালয় থেকে কোটি কোটি টাকা মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, মন্দির, প্যাগোডা, চার্চ ও শ্মশান মেরামতে দেওয়া হয়। এগুলো সরকারি তহবিল থেকে আসে, যেগুলোর উৎস সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংক। এটি একটি সেক্যুলার রাষ্ট্র, ইসলামিক স্টেট নয়। শরিয়ত আমরা ব্যক্তিগতভাবে পালন করি, রাষ্ট্রীয়ভাবে নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি সম্প্রতি চট্টগ্রাম গিয়েছিলাম ‘কঠিন চীবরদান’ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে। ধর্মীয় সম্প্রীতি ও পারস্পরিক সৌহার্দ্য বজায় না থাকলে রাষ্ট্র কখনো অগ্রগতি লাভ করতে পারে না।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের মৃত্যু নিয়ে গুজবের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ফেসবুকে লেখা হয়েছে আমি নাকি মারা গেছি! সীমা থাকা উচিত। মানুষ ভাবছে, আমি সত্যিই মারা গেছি। তবে একদিন তো মরতেই হবে।’
ড. খালিদ হোসেন আরও বলেন, ‘আমরা ১৫ মাস ধরে আন্তরিকভাবে কাজ করছি। আমি এক টাকাও দুর্নীতি করিনি। সাড়ে আট কোটি টাকা হাজিদের ফেরত দিয়েছি। সৌদি আরবে এজেন্সিগুলোর ৩৯ কোটি টাকা আটকে ছিল, সেটিও দেশে এনে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বিতরণ করেছি। তবে ১৬-১৭ বছরের জট এক-দেড় বছরে পুরোপুরি পরিষ্কার করা সম্ভব নয়। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’


