বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তন ও শিল্প দূষণের কারণে দিন দিন বাড়ছে বায়ুদূষণ। দীর্ঘদিন ধরে মেগাসিটি ঢাকাও বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে। সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে বায়ুমান কিছুটা উন্নতি হলেও আজ রাজধানীর বাতাস আবারও ‘অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ৯টার তথ্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণ প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার জানিয়েছে, আজ বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, যার একিউআই স্কোর ৪৩৫, যা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচিত।
একই সময়ে ভারতের রাজধানী দিল্লি ২২৬ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে এবং চীনের রাজধানী বেইজিং ২০৮ স্কোর নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। আর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা রয়েছে চতুর্থ স্থানে, যার একিউআই স্কোর ১৬৬; এটি ‘অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ের বায়ু হিসেবে গণ্য।
আইকিউএয়ার স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়, আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়। ২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ ও অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
এ ছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা আইকিউএয়ার ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। সাধারণত একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে। যেমন—বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)। বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে থাকে। এটা সব বয়সী মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, প্রবীণ ও অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য বায়ুদূষণ খুবই ক্ষতিকর।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।
বায়ুদূষণে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যানসার ও শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর হার বাড়ে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নগরায়ণ, যানবাহনের ধোঁয়া, শিল্প বর্জ্য এবং নির্মাণকাজে ধুলাবালির অনিয়ন্ত্রিত বিস্তারই বায়ুদূষণের মূল কারণ। তাই কার্যকর নীতি গ্রহণ ও পরিবেশবান্ধব নগর পরিকল্পনা ছাড়া এই সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।


সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন