বিশ্বের বেশ কিছু দেশে ইন্টারনেট স্বাধীনতার অবনতি ঘটলেও বাংলাদেশের অবস্থানে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ফ্রিডম হাউসের প্রকাশিত ‘ফ্রিডম অন দ্য নেট ২০২৫’ প্রতিবেদনে বাংলাদেশ গত বছরের তুলনায় ৫ পয়েন্ট এগিয়েছে। এবারের স্কোর ১০০–এর মধ্যে ৪৫; ২০২৪ সালে যা ছিল ৪০।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এ বৈশ্বিক প্রতিবেদনে ৭২টি দেশের ইন্টারনেট স্বাধীনতার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ফ্রিডম হাউস জানিয়েছে, ২৭টি দেশে পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে, ১৭টি দেশে কিছুটা উন্নতি দেখা গেছে। ২০২৪ সালের জুন থেকে ২০২৫ সালের মে পর্যন্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়।
এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া (৪৮), ভারত (৫১) ও শ্রীলঙ্কা (৫৩)। স্কোর ৭০ থেকে ১০০ হলে দেশটিকে ‘স্বাধীন’, ৪০ থেকে ৬৯ হলে ‘আংশিক স্বাধীন’ এবং শূন্য থেকে ৩৯ হলে ‘স্বাধীন নয়’ ধরা হয়। সেই হিসাবে বাংলাদেশ এখনো ‘আংশিক স্বাধীন’ শ্রেণিতে রয়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশ ইন্টারনেট প্রবেশাধিকারে ২৫-এর মধ্যে ১২, বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণে ৩৫-এর মধ্যে ২০ এবং ব্যবহারকারীর অধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে ৪০-এর মধ্যে ১৩ পেয়েছে।
ফ্রিডম হাউস বলছে, গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ইন্টারনেট স্বাধীনতায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে দমনমূলক নীতির অবসান ও কিছু ইতিবাচক সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। প্রতিবেদনে জুলাইয়ের আন্দোলনে ইন্টারনেট বন্ধ করা, মৃত্যুর ঘটনা এবং দমন–পীড়নের বিষয়গুলোও উঠে এসেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার বিটিআরসির নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে মুহাম্মদ এমদাদ-উল-বারীকে নিয়োগ দেয়, যিনি ইন্টারনেট বন্ধ রোধে নীতি পরিবর্তনের চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করে নতুন সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এতে অনলাইন হয়রানি প্রতিরোধে কিছু ইতিবাচক বিধান থাকলেও কনটেন্ট অপসারণ, অনলাইন বক্তব্যের জন্য শাস্তি এবং নজরদারির মতো বিষয় নিয়ে এখনো উদ্বেগ রয়ে গেছে।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কয়েকটি ‘প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ’ নিয়েছে। এর মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য অনলাইনে প্রচার নিষিদ্ধ করা এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত করার বিষয় রয়েছে। গণ–অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সমর্থক মনে করে শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছে ফ্রিডম হাউস। তাঁদের মধ্যে অনলাইন পোর্টালের কয়েকজন সাংবাদিক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেওয়া ব্যক্তিরাও রয়েছেন।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন