আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে নির্বাচনি আচরণবিধি কঠোরভাবে পালনের ওপর। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, আচরণবিধি যথাযথভাবে মানা হলেই নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হতে পারে। এ জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি।
রোববার (১৬ নভেম্বর) রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসির ধারাবাহিক সংলাপের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সিইসি জানান, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ইসি একাধিক কঠিন ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ভোটার তালিকা হালনাগাদ। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৭৭ হাজার মাঠকর্মীর সহায়তায় কয়েক মাসের এই প্রক্রিয়ায় তালিকা থেকে প্রায় ২১ লাখ মৃত ভোটার বাদ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৪০ লাখের বেশি নতুন ভোটার যুক্ত করা হয়েছে, যাদের নাম ভোটার তালিকায় ছিল না।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার বিষয়টিকে ‘ঐতিহাসিক’ উল্লেখ করে সিইসি বলেন, এটি অত্যন্ত জটিল একটি কাজ। আন্তর্জাতিকভাবে এটি খুবই চ্যালেঞ্জিং হলেও আমরা কার্যকর পদ্ধতি চিহ্নিত করতে পেরেছি। এবারই প্রথম প্রবাসীদের ভোট নিশ্চিত করা হচ্ছে।
সিইসি আরও জানান, প্রতি নির্বাচনে প্রায় ১০ লাখের বেশি মানুষ ভোট গ্রহণের কাজে দায়িত্ব পালন করেন, যাদের ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকে না। এবার তাঁদের জন্যও বিশেষ ভোটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সরকারি কর্মচারী এবং কারাবন্দিরাও ভোট দিতে পারবেন।
সংস্কারের ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে ৮০টির বেশি সংলাপ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এর পাশাপাশি নির্বাচনি আচরণবিধির খসড়া ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে মতামত নেওয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষে আচরণবিধি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে বলেও জানান সিইসি।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন একা সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। এ জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্বের সহযোগিতা প্রয়োজন। আশা করি, সবাই আচরণবিধি মানবে এবং নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ করতে সাহায্য করবে।
এ সময় সংলাপে উপস্থিত ছিলেন চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এদিন গণফোরাম, গণফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

