ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

এবার ৮ মাত্রার বেশি ভূমিকম্পের শঙ্কা

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২৫, ০৫:০৭ পিএম
প্রতীকী ছবি

ভূমিকম্প আতঙ্ক এখন ঢাকাসহ গোটা দেশে। গত ২১ নভেম্বর ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার পর দুই সপ্তাহে অন্তত পাঁচটি আফটার শক অনুভূত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ভোর ৬টা ১৫ মিনিটেও দেশে ৪ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। একই সঙ্গে এ দিন চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং অঞ্চলে ৬ দশমিক শূন্য মাত্রার এক শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হয়।

তবে বাংলাদেশে হওয়া কয়েক দফা ভূমিকম্প ঢাকা ও আশপাশেই ঘটেছে। নরসিংদীর মাধবদী থেকে এবং পরবর্তী কম্পনগুলো নরসিংদী ও ঢাকার বাড্ডা এলাকা থেকে এসেছে।

ভূমিকম্প এখন শুধুমাত্র ভারত, চীন বা মিয়ানমার থেকে আসছে না; বরং বাংলাদেশেই এর উৎপত্তি হচ্ছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে বাংলাদেশ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় ৭৬টি ভূমিকম্প ঘটেছে। বিশেষজ্ঞরা ২১ নভেম্বরের নরসিংদীতে ভূমিকম্পকে ইন্ট্রাপ্লেট ইভেন্ট হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

এ নিয়ে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক এ কে এম শাকিল নেওয়াজ গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, এবার মেইন শকের মাত্রা রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৮ বা তারও বেশি হতে পারে। এরপরই থাকবে আফটার শক। তিনি আরও বলেছিলেন, তখনকার পরিস্থিতি হবে আমাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ।

এদিকে জিপিএস পরিমাপ দেখাচ্ছে, দেশের ফল্টগুলো প্রতি বছর কয়েক মিলিমিটার সরতে থাকে, যা ভবিষ্যতে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করছে। বিশেষত সিলেট, ময়মনসিংহ, সুনামগঞ্জ (দৌকি ফল্ট), ঢাকা ও টাঙ্গাইল (মধুপুর ফল্ট), চট্টগ্রাম ও পার্শ্ববর্তী উপকূলীয় এলাকা (চট্টগ্রাম–মিয়ানমার ফল্ট) ব্যাপক ঝুঁকিপূর্ণ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঠিকমতো পর্যবেক্ষণ এবং জনসচেতনতা তৈরি না হলে, বড় ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষতি হবে। বড় ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে পরিবহন খাত, পানি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তারা।

গত ২১ নভেম্বর সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে দেশে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর মাধবদীতে। এতে বিভিন্ন ভবনে ফাটল ধরে এবং ১১ জনের প্রাণহানি হয়। আহত হন কমপক্ষে তিন শতাধিক।

২২ নভেম্বর জেলার পলাশ ও মাধবদীতে ৩ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। ২৭ নভেম্বর পলাশের ঘোড়শালে ৩ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ওই দিনই ভোরের দিকে সিলেটে ও কক্সবাজারের টেকনাফে দুই দফা ভূকম্পন অনুভূত হয়।

এরপর সোমবার (১ ডিসেম্বর) ঢাকা, সিলেট, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। সোমবার দিনগত রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে অনেকেই ভূমিকম্প হওয়ার টের পান। এ ছাড়া বঙ্গোপসাগরে প্রায় প্রতিদিনই স্বল্পমাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হচ্ছে।