পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বৃহস্পতিবার (০৪ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। এ দিন বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।
রিজওয়ানা হাসান জানান, পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি পুলিশ কমিশন গঠন করার অধ্যাদেশ পাস করা হয়েছে। এই কমিশনের প্রধান থাকবে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কাজ করেছেন, এমন গ্রেড ওয়ানের নিচে না এরকম কোনো সরকারি কর্মকর্তা, অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক গ্রেড ওয়ানের নিচে নয়, এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তিনি কর্মরত হতে পারেন অবসরপ্রাপ্ত হতে পারেন, মানবাধিকার এবং সুশাসন বিষয়ে কাজ করেছে অন্তত ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা আছে এমন ব্যক্তি এই কমিশনের সদস্য হবে। এই পুলিশ কমিশন গঠনের আমাদের উদ্দেশ্য—হচ্ছে পুলিশকে জনবান্ধব, জনমুখী করা। এই কমিশন সরকারের সঙ্গে মিলে কাজ করবে। পুলিশ যেন প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে পারে, সেই ব্যাপারে কী কী করণীয় এই বিষয়ে এই কমিশন সরকারকে সুপারিশ প্রদান করবে। পুলিশ যাতে মানবাধিকার সংবেদনশীল হয়, সে বিষয়ে পুলিশের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার— এগুলো তারা চিহ্নিত করবে।
তিনি জানান, এই কমিশনের আরও দুটো গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে—কমিশনের প্রধান কাজ হবে পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ উঠবে, সেগুলোর তদন্ত করে নিষ্পত্তি করা। পাশাপাশি, পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যেকোনো অভিযোগও কমিশনই যাচাই-বাছাই করে সমাধান করবে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এ দুইটি কাজই নতুন পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশের মূল বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচিত। এ ছাড়া পুলিশ কমিশনের জন্য আরও বেশ কিছু দায়িত্ব নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—পুলিশের সার্বিক কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ বাড়াতে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান, বাহিনীর শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পদক্ষেপ নেওয়া, নাগরিক অভিযোগ অনুসন্ধান ও নিষ্পত্তি, পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন সংকট নিরসনে উদ্যোগ গ্রহণ এবং পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে তথ্যপ্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ ও কল্যাণমূলক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন।
কমিশন প্রয়োজনবোধে এসব কর্মপরিকল্পনা সরকারকে সুপারিশ আকারেও পাঠাবে। পাশাপাশি পুলিশ সংক্রান্ত বিভিন্ন আইন ও নীতিমালার গবেষণার ভিত্তিতে সংশোধন বা উন্নয়নের বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দেবে কমিশন।


সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন