আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন ছাত্রদের দুই প্রতিনিধি- ক্রিয়া ও যুব উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। গত সেপ্টেম্বর মাসে তারা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন; সেই ঘোষণার আলোকে নির্ধারিত সময়েই আজ তারা আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই আলোচনায় আসে যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টাদের বেতন–ভাতা ও সুযোগ–সুবিধা নিয়ে কোনো আইন বা নীতিমালা নেই। ২০১১ সালের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হওয়ায় বর্তমান সংবিধানে এসব বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো বিধান রাখা হয়নি। তবে প্রধান উপদেষ্টা কার্যত প্রধানমন্ত্রীর এবং উপদেষ্টারা মন্ত্রীর সমমর্যাদায় দায়িত্ব পালন করছেন বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী প্রধান উপদেষ্টা ‘দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স (রেমুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) (অ্যামেন্ডমেন্ট) আইন, ২০১৬’ অনুযায়ী বেতন–ভাতা ও সুবিধা পাচ্ছেন। উপদেষ্টারা ‘দ্য মিনিস্টারস, মিনিস্টার অব স্টেট অ্যান্ড ডেপুটি মিনিস্টারস (রেমুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) (অ্যামেন্ডমেন্ট) আইন, ২০১৬’-এর আওতায় মন্ত্রীর সুবিধা ভোগ করছেন।
প্রধান উপদেষ্টা মাসে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা বেতন, মাসিক বাড়ি ভাড়া বাবদ ১ লাখ টাকা এবং দৈনিক ৩ হাজার টাকা ভাতা পান।
অন্যদিকে উপদেষ্টারা মন্ত্রীর সমান মাসে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা বেতন, দৈনিক ২ হাজার টাকা ভাতা, মাসিক ১০ হাজার টাকা নিয়ামক ভাতা এবং ১০ লাখ টাকার স্বেচ্ছাধীন তহবিল পান। মোবাইল ফোন কেনার জন্য তারা ৭৫ হাজার টাকা ভর্তুকি পান। সরকারি খরচে সার্বক্ষণিক গাড়ি ব্যবহারসহ ঢাকার বাইরে সফরে অতিরিক্ত জিপ গাড়ির সুবিধাও তারা পান।
সরকারি বাসভবনের গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, টেলিফোন ও রক্ষণাবেক্ষণের সব খরচ সরকার বহন করে। সরকারি বাসায় না থাকলে উপদেষ্টারা মাসিক ৮০ হাজার টাকা বাড়িভাড়া, বাড়ি ব্যবস্থাপনা খরচ এবং সব ধরনের সেবা খাতের বিল পান। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রহরী ছাড়াও তারা বাসা থেকে অফিস এবং অফিস থেকে বাসায় যাতায়াতের খরচ পান। নিজের, পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি অন্তত দুইজন গৃহকর্মীর ভ্রমণ ব্যয়ও সরকার বহন করে।
একজন উপদেষ্টার জন্য উপসচিব পদমর্যাদার একজন একান্ত সচিব, সহকারী সচিব পদমর্যাদার একজন সহকারী একান্ত সচিব এবং ক্যাডারের বাইরের আরও একজন সহকারী একান্ত সচিব থাকেন।
এছাড়া জাতীয় বেতনস্কেলের ১০ম গ্রেডের দুই কর্মকর্তা, একজন জমাদার, একজন আর্দালি, দুইজন এমএলএসএস এবং একজন পাচক বা পিয়ন নিয়োজিত থাকেন।
সেপ্টেম্বরে পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া দুই উপদেষ্টার এই আনুষ্ঠানিক পদত্যাগের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদের দুটি পদ শূন্য হলো।



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন