শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ডয়েচে ভেলে

প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২৫, ০৮:৩৬ পিএম

বিশ্লেষণ

ট্রাম্পের শুল্ক-ধাক্কা: কোন পথে হাঁটবে ভারতের কূটনীতি

ডয়েচে ভেলে

প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২৫, ০৮:৩৬ পিএম

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি- সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি- সংগৃহীত

ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণায় উত্তাল উপমহাদেশের কূটনৈতিক মহল। ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সঙ্গে রয়েছে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করার ‘শাস্তি’ হিসেবে অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর হুমকি। অন্যদিকে, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার বিষয়টি ক্রমেই স্পষ্ট করেছে ওয়াশিংটন। পাক খনিজ তেলে মার্কিনি নজর রয়েছে—সে কথাও স্পষ্ট করেছেন দুই দেশের নেতৃত্ব। এতেই শোরগোল পড়েছে উপমহাদেশের রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক মহলে।

রাশিয়ার বন্ধু বলেই মার্কিন শাস্তি?

স্বাধীনোত্তর ভারতের শুরুর দিকের বন্ধু রাশিয়া। সামরিক সরঞ্জাম থেকে তেল আমদানি দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক দৃঢ় করেছে। এক সময় দেশের সামরিক সরঞ্জামের প্রায় ৯০ শতাংশ আসত রাশিয়া থেকে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র বলে, এখন তা কমলেও প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ সরঞ্জাম পাঠায় রাশিয়া। এর পাশাপাশি, রাশিয়ার থেকে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে তেল আমদানি করে ভারত। এর ফলে এমনকি, ২০২২ থেকে শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্বের চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে ভারত। এতেই দৃশ্যত অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প।

ভারতকে যুক্তরাষ্ট্র বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও, তাদের নতুন শুল্কনীতিতে ট্রাম্পের রোষানলে পড়েছে ভারত। সাবেক ভারতীয় রাষ্ট্রদূত এবং ভারতীয় ফরেন সার্ভিসের অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিক পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘ভারত যে রাশিয়ার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখে তা যুক্তরাষ্ট্র তো অনেক আগে থেকেই জানে। ওদের কাটসা বা কাউন্টারিং অ্যামেরিকাস অ্যাডভারসারিজ থ্রু স্যাঙ্কশন অ্যাক্ট থেকে ভারতকে অব্যাহতি দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। ওরা খুব ভালো করেই জানে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক হঠাৎ করে নষ্ট হয়ে যাবে না।’

তবে এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র দৃশ্যত ‘ভারত-বিরোধী’ অবস্থান নিয়েছে বলে মনে করেছেন পিনাক রঞ্জন। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করছে। ভারতকে চাপে রাখার পাশাপাশি, চীন এবং আফগানিস্তানের উপর নজর রাখতে এটা তাদের কৌশলগত সুবিধা দেবে।’

তিনি মনে করেন, এই পরিস্থিতিতে ভারত ভেবেচিন্তে পদক্ষেপ নেবে। বলেন, ‘আমরা কী সিদ্ধান্ত নিই, সেটাই এখন দেখার বিষয়।’

‘ভারতকে অপদস্ত করতে চায়’

অন্যদিকে, ভারতকে ‘অপদস্ত’ করার জন্যই পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠটা বাড়াচ্ছে বলে মনে করছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ কর্নেল শান্তনু রায়। তিনি বলেন, ‘চীন এবং আফগানিস্তানের উপর নজর রাখার পাশাপাশি ভারতকে অপদস্ত করতেই পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ককে দৃঢ় করছেন ট্রাম্প। এর কিছুটা প্রভাব ভারত-যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক সম্পর্কে অবশ্যই পড়বে। দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কেও এর প্রভাব পড়বে। খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ভারতের ওষুধ শিল্প। ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বার্তা দিতে চাইল, তারা ভারতীয় পণ্যের উপর নির্ভরশীল নয়। আমার মনে হয় নিষয়টা এত সহজ হবে না। যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপানের পাশাপাশি ভারতও কোয়াড দেশগুলোর একটি। ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার দায় আছে যুক্তরাষ্ট্রের।’

‘কূটনৈতিক সম্পর্ক এত সহজে ভাঙে না’

তবে এত সহজেই ভারত-মার্কিন কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকবে বলে মনে করেন না বর্ষীয়ান সাংবাদিক প্রণয় শর্মা। তিনি বলেন, ‘গত ২০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত পারস্পরিক সম্পর্ক তৈরি করেছে। রাতারাতি তা তলানিতে এসে ঠেকবে এমনটা আমার মনে হয় না। এটা ব্যতিক্রমী সময়। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে যুক্তরাষ্ট্রের বহু বন্ধু দেশের সঙ্গে সম্পর্ক তিক্ত হয়েছে। আবার অনেক শত্রু দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয়েছে। ফলে এই মুহূর্তের টানাপড়েনকে ট্রাম্পের শাসনকালের চরিত্র বলে ধরে নেওয়া ভালো।’

তবে এই শুল্ক আরোপের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির ভূমিকা আছে বলে মনে করেন প্রণয়। তিনি বলেন, “ট্রাম্প খুব ভালো করেই জানেন যুক্তরাষ্ট্রের বাজার পৃথিবীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। নতুন শুল্ক বসালেও দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য করে লাভবান হবে। তবে এই মুহূর্তে মার্কিন অর্থনীতির অবস্থা ভালো নয়। সেখানে মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে এক প্রকার অর্থনীতির স্থবিরতা মিশে ‘স্ট্যাগফ্লেশন’ চলছে।”

প্রণয় মনে করেন, ‘'ট্রাম্প দেখেছেন বিশ্বায়নের পরে উন্নয়নশীল দেশগুলো খুব দ্রুত উন্নতি করেছে। উন্নত দেশগুলোর উন্নয়ন থমকে গেছে। নতুন শুল্কনীতির ফলে নিজের দেশের আয় বাড়ানোর চেষ্টা করছেন ট্রাম্প। নতুন বাণিজ্য চুক্তির ফলে অনেক দেশই যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এতেও অর্থনীতির সুবিধা হবে।’

প্রণয় বলেছেন, ‘এ কথা মনে রাখতে হবে, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকবেন আর কয়েক বছর। তারপরে কী হবে কেউ জানে না। কূটনৈতিক সম্পর্ক এত সহজে উল্টে যায় না। ভারতকে এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া দুই দেশের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক রাখতে হবে। ব্যালেন্স করতে হবে।’

Shera Lather
Link copied!