প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটকে বাস্তবভিত্তিক বললেও এতে নতুন বন্দোবস্ত ও অর্থনৈতিক রূপান্তরের আকাঙ্ক্ষার পূর্ণ প্রতিফলন ঘটেনি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে দলটির অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির আহ্বায়ক প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় এসব মন্তব্য করেন।
এ সময় নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বর্তমান সময়ের অর্থনৈতিক সংকট ও বাস্তবতাকে বাজেট কিছুটা উপস্থাপন করলেও, বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের যে স্বপ্ন ও কৌশল দরকার ছিল- তা অনুপস্থিত।’
তিনি বলেন, ‘ঋণনির্ভর ও লুটপাট-পরিপুষ্ট পূর্ববর্তী অর্থনৈতিক কাঠামোর ভেতরেই বাজেট প্রণয়ন করতে হয়েছে সরকারকে। ফলে নতুন কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি বা বেকারত্ব দূরীকরণের মতো কোনো সুস্পষ্ট রূপরেখা এই বাজেটে নেই।’
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বাজেট অর্ধেকে নামিয়ে আনা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘রেমিট্যান্স নির্ভর অর্থনীতির জন্য প্রবাসীরা প্রধান চালিকাশক্তি। অথচ তাদের কল্যাণে ব্যয় বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া খুবই হতাশাজনক। আমরা এর নিন্দা জানাই।’
ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য বাজেটে বিশেষ কোনো কার্যকরী প্রণোদনা না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। একই সঙ্গে ই-কমার্স ও ডিজিটাল লেনদেনে ট্যাক্স বৃদ্ধিকে ডিজিটাল ইকোনমির জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘এই পদক্ষেপ উদ্যোক্তাদের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কাজ করাকে নিরুৎসাহিত করবে।’
প্রস্তাবিত বাজেটে ‘কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ’ রাখা উচিত হয়নি বলে উল্লেখ করে এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, ‘এই সুযোগ আদতে দুর্নীতিকে উৎসাহিত করে। সরকার পরিবর্তনের পরে এই সুবিধা দিয়েও কালো টাকা বৈধ করা সম্ভব হবে না। বরং এটি জনআস্থা নষ্ট করবে।’
এনসিপি জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের জন্য ৪০৫ কোটি টাকা বরাদ্দকে স্বাগত জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা চাই, এই বরাদ্দ যথাযথভাবে খরচ হোক এবং পরিবারগুলোর প্রতি সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা দ্রুত বাস্তবায়িত হোক।’
সংবাদ সম্মেলনের শেষাংশে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাজেটে সরকারের একটি প্রচেষ্টা ছিল তা অস্বীকার করি না, কিন্তু আমরা যে অর্থনৈতিক রূপান্তরের কথা বলি, অর্থনৈতিক কাঠামো বদলের যে কৌশল দরকার- সেটির অনুপস্থিতি এই বাজেটকে সীমিত করে ফেলেছে।’
আপনার মতামত লিখুন :