অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) কাজী নিয়ামুল হকের পদত্যাগের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার (১৮ জুলাই) উত্তাল ঢাকা সিটি কলেজ চত্বর। সকাল থেকেই কলেজের মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন ২৫তম ও ২৬তম ব্যাচের শতাধিক শিক্ষার্থী।
আন্দোলনকারীরা কলেজ প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। ‘স্বৈরতন্ত্রের পতন চাই’, ‘ছাত্রদলের গদির শেষ ঘণ্টা বাজছে’, ‘প্রশাসনিক সিন্ডিকেট ভাঙো’,- এমন নানা স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে সিটি কলেজের সামনের সড়ক।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজী নিয়ামুল হক কলেজ পরিচালনায় কর্তৃত্ববাদী মনোভাব দেখিয়ে আসছেন। তার ঘনিষ্ঠ একটি গোষ্ঠী প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির পরিবেশ নষ্ট করছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, আহত সহপাঠীদের ঘটনায় আজও কোনো নিরপেক্ষ তদন্ত হয়নি। প্রশাসন নীরব। এই পরিস্থিতিতে তারা শ্রেণি কার্যক্রম, অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা ও ফি প্রদানসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
২৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাইহান হোসেন বলেন, ‘আমরা ক্লাস করতে চাই, পরীক্ষা দিতে চাই। কিন্তু একজন স্বঘোষিত অধ্যক্ষের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে প্রতিনিয়ত কলেজের পরিবেশ খারাপ হচ্ছে। আহতদের নিয়ে প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই।’
২৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তাসনিম আক্তার বলেন, ‘শুধু আমাদের না, আগের ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও এই প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল। কিন্তু প্রতিবারই ম্যানেজ করে চাপা দেওয়া হয়েছে। এবার আর তা হতে দেব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘গেট বন্ধ করে আমাদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে, অথচ আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ন্যায্য দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছি।’
আন্দোলনের কারণে কলেজ ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে। আজ দুপুর পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি, তবে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
প্রসঙ্গত, গত ৮ জুলাই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনায় আহত হন মেহেদী হাসান তানিম ও অপু নামের দুই শিক্ষার্থী। সেই ঘটনার পর থেকেই কলেজে উত্তেজনা বাড়তে থাকে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কলেজ কর্তৃপক্ষ একাধিকবার অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা ও ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করলেও শিক্ষার্থীদের দাবি মানেনি।
এখনো পর্যন্ত কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত বা আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কলেজ কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে নিরবতা পালন করে আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চাইছে।
আপনার মতামত লিখুন :