রাজধানীর গুলিস্তানে অবস্থিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়টি বর্তমানে পরিণত হয়েছে পরিত্যক্ত ভবনে। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভবনটি ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাটের পর সেটি একরকম ভাসমান মানুষের আবাসে পরিণত হয়েছিল। তবে ঘটনার প্রায় এক বছরের মাথায় এসে সেটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু এই উদ্যোগ কার, তা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছেন না কেউই।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের সামনে ঝুলছে ‘আন্তর্জাতিক ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট’ নামের একটি ব্যানার। ভবনের দরজা-জানালা, জানালার গ্রিল, সুইচবোর্ড, বৈদ্যুতিক লাইন, লিফট, এমনকি ফ্লোরের টাইলস—সবই খুলে নিয়ে গেছে কেউ না কেউ। শুধু দেয়ালগুলো অবশিষ্ট রয়েছে। ভেতরে চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। একটি দল নিচতলায় জমে থাকা নোংরা পানি সরাচ্ছে, আর ভবনের ভেতরে কয়েকজন শ্রমিক কাজ করছেন।
ভবনের ভেতরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করা চাঁন মিয়া বলেন, ‘আগে হাইকোর্ট বা স্টেডিয়ামের সামনে থাকতাম, এখন ১১ মাস ধরে এখানেই থাকি। একসময় এখানে আসলে লাঠি দিয়ে তাড়িয়ে দিত, এখন আমি এখানে থাকি। সব কিছুই তুলে নিয়ে গেছে মানুষজন—টোকাই, মাদকাসক্ত এমনকি ভদ্রলোকও। আমিও লোহার তার, লক্কর-বাক্কর বিক্রি করেছি।’
তিনি বলেন, এখন পরিচ্ছন্নতার কাজও তারাই করছেন। ‘আমার ছেলেও কাজ করছে। আমরা ১২ জন এখানে দৈনিক মজুরিতে কাজ করি। বুধবার থেকে কাজ শুরু হয়েছে।
কে কাজ করাচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্ররা করাচ্ছে।’
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২৩ জুন শেখ হাসিনা এই ১০ তলা ভবনটি উদ্বোধন করেছিলেন। প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আওয়ামী লীগের এই কেন্দ্রীয় কার্যালয়টি ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-এর সময় ভাঙচুর ও আগুনের শিকার হয়। তারপর থেকেই ভবনটি পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়।
আপনার মতামত লিখুন :