ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫

আলোচিত চাঁদাবাজ রিয়াদের বাসায় অভিযানে যা যা মিলল

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২৫, ১২:৩৩ পিএম
আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান রিয়াদ। ছবি- সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশানে চাঁদাবাজির অভিযোগে আলোচনায় আসা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান রিয়াদের নাখালপাড়ার বাসায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। 

গত সোমবার (২৮ জুলাই) রাতে চালানো এই অভিযানে দুই কোটি ২৫ লাখ টাকার চেক এবং প্রায় ২০ লাখ টাকার এফডিআর নথি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাতে প্রবাসী সাংবাদিক জাওয়াদ নির্ঝর নিজের ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন। গুলশান বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা নির্ঝরের এই পোস্টের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

ফেসবুক পোস্টে নির্ঝর লেখেন, অভিযানে রিয়াদের একটি বেসরকারি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৬০-৭০ লাখ টাকা লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।

আলোচিত চাঁদাবাজ রিয়াদের বাসায় অভিযানে যা যা পাওয়া গেল শিরোনামে দেওয়া ওই ফেসবুক পোস্টে জাওয়াদ নির্ঝর লিখেছেন, ‘সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে গুলশানে চাঁদাবাজির ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান রিয়াদ। ২৮ জুলাই রাত ১১টা পর্যন্ত পুলিশ রিয়াদের নাখালপাড়ার বাসায় অভিযান চালায়। এ সময় দুই কোটি ২৫ লাখ টাকার একটি চেকের সন্ধান পায় পুলিশ। আগামী মাসের ২ তারিখে ওই চেকটি ক্যাশ হওয়ার কথা ছিল।’

টাকার সূত্র উল্লেখ করে জাওয়াদ নির্ঝর বলেন, ‘গুলশানে আওয়ামীপন্থি এক ব্যবসায়ীর জমি উদ্ধারে ৫ কোটি টাকা চুক্তি হয়েছিল রিয়াদের সঙ্গে। সেই চুক্তির দুই কোটি ২৫ লাখ টাকার লেনদেনে চেক ছিল রিয়াদের ঘরে।’

এফডিআর ও ব্যাংক লেনদেন সম্পর্কে এই প্রবাসী সাংবাদিক জানিয়েছেন, পুলিশ তার ঘর থেকে অন্তত ১০টি এফডিআরের কাগজ পেয়েছে। যেগুলোতে সর্বনিম্ন দুই লাখ টাকা করে রাখা আছে। গত কয়েক মাসে রিয়াদের একটি বেসরকারি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৬০-৭০ লাখ টাকার লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। রিয়াদের বাসায় এই অভিযানের ২ দিন পরও এখনো পুলিশ অফিশিয়ালি কোনো বক্তব্য দেয়নি।’

এর আগে ২৬ জুলাই রাজধানীর গুলশান-২ নম্বরে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাড়িতে চাঁদা আনতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন নেতাসহ পাঁচজন। ওই ঘটনায় গুলশান থানায় একটি মামলা হয়। সিদ্দিক আবু জাফরের করা মামলায় রিয়াদ ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- কাজী গৌরব অপু, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব, মো. ইব্রাহিম হোসেন ও আইনের সংঘাতে জড়িত শিশু আমিনুল ইসলাম।

মামলার এজাহারে বলা হয়, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয় পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকি দিয়ে পঞ্চাশ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেয়।

একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরও ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।

পরবর্তীতে আমি বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করি। তাৎক্ষণিক পুলিশ আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব, ইব্রাহিম হোসেন ও আমিনুল ইসলামকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে। এ সময় কাজী গৌরব অপু ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।