জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা সারোয়ার তুষার জনসম্মুখে যদি ক্ষমা না চায় তাহলে তার ‘নগ্ন ভিডিও’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন দলটির সাবেক নেত্রী নীলা ইসরাফিল।
শনিবার (৯ আগস্ট) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে লাইভে এসে এ কথা বলেন তিনি।
লাইভে নীলা ইসরাফিল বলেন, সারোয়ার তুষার ও এনসিপির যারা আমাকে নিয়ে নোংরা খেলায় মেতেছে তাদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই, আপনারা যদি এই মিথ্যা প্রচারণা থেকে বিরত না থাকেন তাহলে আমি বাধ্য হব তুষার নেপালে বসে আমাকে যেসব ভিডিও পাঠিয়েছে, যেসব নগ্ন জিনিস পাঠিয়েছে তা প্রকাশ করতে।
তিনি বলেন, তখন কোথায় গিয়ে আপনারা প্রিটেন্ট করবেন তা আমি কিন্তু জানি না। আমি সতর্ক করছি, আমি চাই তুষার যেন জনসম্মুখে সরি বলে। আমি যা কিছু প্রকাশ করছি তা কিন্তু বানোয়াট কিছু না।
নীলা ইসরাফিল বলেন, তুষার যদি হাসপাতালের ফর্মে তার নাম ব্যবহার করতে না চাইত , তার মনের মধ্যে যদি শয়তানি চিন্তা না থাকত তাহলে আমার অভিভাবক হিসেবে সেখানে উপস্থিত মানবাধিকার এ্যাক্টিভিস্ট রেজাউর রহমান লেলিন ভাইয়ের নাম কেন দিল না? উপস্থিত এনসিপির নারী নেত্রী সাদিয়ার নাম কেন দেওয়া হলো না? আপনারা এসব বিষয় নিয়ে কোন কথা বলছেন না? অন্য বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলছেন যা কাজের না।
তিনি আরও বলেন, যদি আপনারা আমাকে সরি না বলেন, দুঃখ প্রকাশ না করেন , ভুল করেছেন তা যদি স্বীকার না করেন তাহলে আমি বাধ্য হব আমার কাছে তুষারের যেসকল ভিডিও ও ছবি আছে সেগুলো প্রকাশ করে দিতে।
এর আগে, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় আমার অনুমতি ছাড়াই হাসপাতালের নথিতে সারোয়ার তুষার আমার স্বামীর নামের জায়গায় নিজের নাম বসিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সাবেক এনসিপি নেত্রী নীলা ইসরাফিল।
শনিবার (৯ আগস্ট) নিজের ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এ অভিযোগ করেন তিনি।
পোস্টে নীলা ইসরাফিল লিখেন, আমি নীলা ইসরাফিল। ওই দিন আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম, সম্পূর্ণ অজ্ঞান অবস্থায়। আমার নিজের নাম, পরিচয়, জীবনের সিদ্ধান্ত সবকিছুর ওপর তখন আমার কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। আর ঠিক সেই সুযোগেই সারোয়ার তুষার আমার স্বামীর নামের জায়গায় নিজের নাম বসিয়ে দিয়েছে।
তিনি লিখেন, এটা কোনো ‘ভুল নয়’, এটা আইনগতভাবে জালিয়াতি। বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারায় স্পষ্টভাবে বলা আছে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহারযোগ্য নথি মিথ্যা তথ্য দিয়ে তৈরি করা এবং তা ব্যবহার করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এছাড়া বাংলাদেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে অনুমতি ছাড়া কারো ব্যক্তিগত তথ্য পরিবর্তন করাও অপরাধ।
নীলা ইসরাফিল লিখেন, আমার অনুমতি ছাড়া আমার পারিবারিক পরিচয় বিকৃত করা মানে শুধু আমার সামাজিক সম্মানকে আঘাত করা নয় এটা আমার মানবাধিকার লঙ্ঘন। ইউডিএইচআর-এর (মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র) ধারা ৩, ৫, ১২ ও ২২ অনুযায়ী আমার ব্যক্তিগত মর্যাদা, গোপনীয়তা এবং আইনি নিরাপত্তার অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়েছে। হাসপাতালের নথিতে এই ভুয়া তথ্য ভবিষ্যতে আমার বিরুদ্ধে ব্যবহার হতে পারে, আমার সামাজিক ও আইনগত নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
তিনি লিখেন, আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এ ঘটনার তদন্তের দাবি করছি।
নীলা ইসরাফিল লিখেন, দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনের সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হোক, আমার প্রকৃত তথ্য পুনঃস্থাপন করা হোক এবং রোগীর অসহায় অবস্থার সুযোগ নিয়ে যারা এমন অপরাধ করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করা হোক এটা শুধু আমার লড়াই নয়, এটা প্রতিটি মানুষের নিজের পরিচয়, মর্যাদা এবং অধিকারের জন্য লড়াই।
আপনার মতামত লিখুন :