শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫, ০২:৫৪ এএম

‘শাপলা’ নিয়ে নাছোড়বান্দা এনসিপি, ইসির সাফ ‘না’

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫, ০২:৫৪ এএম

‘শাপলা’ নিয়ে নাছোড়বান্দা  এনসিপি, ইসির সাফ ‘না’

নিবন্ধন আবেদনের সময় দলীয় প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’, ‘কলম’ বা ‘মোবাইল ফোন’ চেয়ে আবেদন করলেও শেষে এসে শাপলা প্রতীকের দাবিতে নাছোড়বান্দা জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি। এদিকে নির্বাচন কমিশনের প্রতীকের তালিকায় শাপলা না থাকায় তা বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব নয় এ কথা নির্বাচন কমিশন (ইসি) বারবার জানালেও এনসিপি তা কানে তুলছে না। নানা যুক্তি দেখিয়ে এরই মধ্যে শাপলা না পেলে তারা রাজনৈতিক ও আইনিভাবে মোকাবিলা করার হুমকি দিয়েছেন। এনসিপি বলছে, শাপলা না দিলেও তাদের লাল শাপলা বা সাদা শাপলা যেন প্রতীক হিসেবে দেওয়া হয়। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটা বড় বিষয় নয়, এনসিপি চাইলে ছাড় দিতে পারত। কিন্তু তা না করে এটাকে রাজনৈতি ইস্যু বানাতে চাচ্ছে দলটি।

জুলাই গণঅভ্যত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি গত ২২ জুন নিবন্ধনের জন্য ইসিতে আবেদন করে। এ সময় তারা জেলা উপজেলায় কমিটির তালিকা, দলীয় সদস্যদের বিভিন্ন তথ্যসহ ৪৩ হাজার পৃষ্ঠার ডকুমেন্টসও জমা দিয়েছিল। কিন্তু প্রাথমিক বাছাইয়ে সব শর্তপূরণ করতে পারেনি। ফলে এনসিপিসহ আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দলকে সময় দেওয়া হয়। শেষমেশ সব শর্তপূরণ করে এনসিপি নিবন্ধন পাওয়ার পথে থাকলেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দলীয় প্রতীক। এনসিপি আবেদনের সময় তিনটির মধ্যে একটিকে দলীয় প্রতীক হিসেবে চায়। কিন্তু সবশেষে তারা বলছে প্রতীক হিসেবে শাপলাই দিতে হবে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন বলছে, শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক। এটাকে দলীয় প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দেওয়ার বিধান নেই। সর্বশেষ গত সোমবার নির্বাচন কমিশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ওই দিন তিনি শাপলা নিয়ে নিজেদের কঠোর অবস্থানের কথা জানান তিনি। পরদিন মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘শাপলা প্রতীক এনসিপিকে বরাদ্দ দেওয়া হবে না। কারণ এটি ইসির সংরক্ষিত প্রতীকের তালিকায় নেই। এখন এনসিপিকে বিকল্প প্রস্তাব জমা দিতে হবে এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে দুই পক্ষের পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে।’ এ ছাড়া নির্বাচনি আচরণবিধিমালা এবং আইন মন্ত্রণালয় থেকে ভেটিং হয়ে আসা প্রতীকের তালিকাও শাপলা নেই। এ ছাড়া শাপলাকে প্রতীক না দেওয়ার জন্য চলতি বছর সিদ্ধান্তও নিয়েছে ইসি। 

এ ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরই এনসিপির উত্তরাঞ্চলের প্রধান সংগঠক সারজিস আলম ইসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘আমরাও দেখব নির্বাচন কীভাবে হয় এবং কারা ক্ষমতার স্বপ্ন দেখে।’
এদিকে ইসির অস্বীকৃতির পরও গত বৃহস্পতিবার নির্বাচনি বিধি সংশোধন করে শাপলা, সাদা শাপলা বা লাল শাপলাকে তালিকাভুক্ত করে তিনটির একটি প্রতীক বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে ইসিতে চিঠি পাঠিয়েছে এনসিপি। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সই করা ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘কমিশন যেন সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাদের আগের স্বেচ্ছাচারী ও একরোখা মনোভাব পরিহার করে এবং এমনভাবে সিদ্ধান্ত নেয় যাতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন এবং সব দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে তাদের আন্তরিকতা নিয়ে জনমনে কোনো প্রশ্ন না ওঠে।’

প্রতীক না পেলে রাজনৈতিক ও আইনিভাবে মোকাবিলা
নির্বাচন কমিশন যদি শাপলা দলীয় প্রতীক হিসেবে না দেয় তাহলে রাজনৈতিক ও আইনিভাবে মোকাবিলা করার হুমকি দিয়েছে এনসিপি। যদি শাপলা প্রতীক হিসেবে না পায় তাহলে রাজনীতির মাঠে নিজেদের অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যাবে বলে মনে করছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে শিগগিরই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করবেন বলেও জানিয়েছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। 

এনসিপি সূত্র বলছে, শাপলা প্রতীক বরাদ্দের ক্ষেত্রে আইনগত কোনো বাধা নেই। ‘শাপলা জাতীয় ফুল’ এমন অজুহাত দেখালেও জাতীয় ফল ‘কাঁঠাল’কে এরই মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আবার তৃণমূল বিএনপি নামের দলটিকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ‘সোনালি আঁশ’ প্রতীক। সুতরাং ‘শাপলা’ জাতীয় ফুল হলেও দলের প্রতীক হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে আইনগত কোনো বাধা নেই। 
তারা আরও বলেন, এনসিপির সঙ্গে ইসির একাধিক বৈঠকে শাপলা বরাদ্দের আশ্বাস দেওয়া হয়। এমনকি শাপলাকে প্রতীক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে আইন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানোর ঘোষণা দেয় ইসি। তবে শেষ পর্যন্ত একটি প্রভাবশালী সংস্থার বাধার কারণে ইসি তার আগের অবস্থান থেকে পিছিয়ে আসে। 

এ প্রসঙ্গে এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, শাপলা প্রতীকের ব্যাপারে এনসিপি শতভাগ সিরিয়াস। শাপলাকে প্রতীক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত না করা নির্বাচন কমিশনের একটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এনসিপি এ সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক ও আইনি উভয় দিক থেকে মোকাবিলা করবে। 
দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘শাপলা প্রতীক নিয়েই নির্বাচনে অংশ নেব। যদি প্রতীক না দেওয়া হয়, তবে আমাদের সমাধান হবে রাজপথে।’
নির্বাচন কমিশনের ভাষ্য 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসিরউদ্দিন গত বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘নাগরিক ঐক্যও শাপলা প্রতীক চেয়েছিল। তাদেরও দেওয়া হয়নি। তখন কোনো আলোচনা ছিল না। এখন কেন এত আলোচনা বুঝলাম না।’
নির্বাচনি বিধি সংশোধন করে এনসিপির জন্য শাপলা প্রতীক চেয়ে দেওয়া চিঠি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের কমিশনে আলোচনা করে করণীয় নির্ধারণে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এখন কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। আমরা কমিশন সভায় বসে আলোচনা করে যা করার করব।’

বিশ্লেষকরা যা বলছেন
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম বলেন, যেকোনো দল যেকোনো প্রতীক চাইতেই পারে। কিন্তু শাপলা যেহেতু বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকÑ এটা নিয়ে সংবেদনশীলতা আছে। আইনগত ও নৈতিক বৈধতার বিষয় থাকায় নির্বাচন কমিশন হয়তো সেটা দিতে চাচ্ছে না। কিন্তু এটা নিয়ে এনসিপি যেভাবে কথাবার্তা বলছে, তা সুখকর মনে হয় না।  

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!