চিলড্রেন পার্টির নেতৃত্বে জোট করবে না গণঅধিকার পরিষদ: আবু হানিফ

গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, ‘গণঅধিকার পরিষদ বাংলাদেশের প্রতিকূল পরিবেশে রাজপথে জন্ম নিয়েছে। দল গঠনের আগেও ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদ রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। শেখ হাসিনা হামলা, মামলা, নির্যাতন করেও আমাদের দমন করতে পারেননি। গণঅধিকার পরিষদের রাজনৈতিক সংগ্রামের একটি ইতিহাস আছে। সারাদেশেই আমাদের সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে উঠেছে।’

গণঅধিকার পরিষদের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ফেনী জেলা গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) ফেনী শহরের সিজলার চাইনিজ রেস্টুরেন্টে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘গণঅধিকার পরিষদ জোটে গেলে এমন দলের সঙ্গেই যাবে, যাদের রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা আছে, যাদের ভোট আছে। নামসর্বস্ব, ভোটবিহীন বা সাংগঠনিক ভিত্তিহীন কোনো ‘চিলড্রেন পার্টি’র সঙ্গে জোট করবে না গণঅধিকার পরিষদ। আমরা রাজনীতিতে দ্বিতীয় বা তৃতীয় শক্তি হতে নয়, বরং সরকার গঠনের লক্ষ্যেই কাজ করছি। এই দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষদের সঙ্গে নিয়ে ইনশাআল্লাহ আগামীতে গণঅধিকার পরিষদ সরকার গঠন করবে।’

আবু হানিফ আরও বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ ছিল। কিন্তু অভ্যুত্থানের পর স্বার্থের দ্বন্দ্বে তারা বিভক্ত হয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে পড়বে। এতে আওয়ামী লীগ ফিরে আসার সুযোগ তৈরি হবে।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আজকে পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনা এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের সুযোগ না দিলে তারা নির্বাচন বর্জন করবে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই- জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ মানুষ জীবন দিয়েছে, ৩০ হাজার আহত হয়েছে। জুলাই গণহত্যার বিচারের আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফেরার কোনো সুযোগ নেই। ভারতসহ বিভিন্ন দেশ আওয়ামী লীগকে ফেরানোর ষড়যন্ত্র করছে, কিন্তু যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় প্রয়োজনে মানুষ আবারও রাজপথে নামবে।’

সভায় গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আব্দুজ জাহের বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু আমরা যে স্বপ্ন নিয়ে লড়াই করেছি, তা কি বাস্তবায়িত হয়েছে? আগে যারা মজলুম ছিল, তাদের অনেকেই এখন জুলুমবাজদের কাতারে।

আগে আওয়ামী লীগ যেভাবে দখল করেছিল, ৫ আগস্টের পরও সেই দখলমুক্তি হয়নি- শুধু হাত বদল হয়েছে।’

উচ্চতর পরিষদের আরেক সদস্য রবিউল হাসান বলেন, ‘ড. ইউনূস রাষ্ট্র পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন। একসময় অনেকে বলতেন- এই সরকারকে আরও পাঁচ বছর সময় দিতে হবে। কিন্তু এখন কেউ তা বলছে না, কারণ এই সরকার ঐক্য ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।

গণঅধিকার পরিষদ ফেনী জেলার আহবায়ক হাবিবুর রহমান বাহারের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রেজাউল করিম সুজনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন,গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিলু খান, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক ইলিয়াস মিয়া,কেন্দ্রীয় সদস্য লায়ন নুর ইসলাম, ফেনী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাউদ্দিন আলাল, জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুর রহিম,এবি পার্টির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলম বাদল , ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ফেনীর সাধারণ সম্পাদক একরামুল হক,এনসিপির ফেনী জেলার সংগঠক জুবায়ের, যুব অধিকার পরিষদ ফেনী জেলার সভাপতি পারভেজ,ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি গাজী বাপ্পি, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সভাপতি জিয়াউদ্দিন প্রমুখ।