অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক সম্প্রতি জারিকৃত ‘পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ দ্রুত প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আহ্বান জানান তিনি।
বিবৃতিতে আবদুর রব বলেন, ‘দেশের মানুষের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষিত স্বাধীন ও জবাবদিহিমূলক পুলিশ বাহিনী—অর্থাৎ যার ভিত্তি গণতন্ত্র, মানবিক মর্যাদা রক্ষা, নিরাপত্তা প্রদান এবং আইনের শাসন। সরকার তা উপেক্ষা করে একটি দুর্বল ও নামমাত্র পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ চাপিয়ে দিয়েছে। এটি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রতিশ্রুত সংস্কারের সঙ্গে চরমভাবে সাংঘর্ষিক, যা প্রকারান্তরে সংস্কার-প্রতিরোধের রাজনৈতিক কৌশল।’
‘ফলে জনগণের অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষার পরিবর্তে পুলিশকে ক্ষমতা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে ব্যবহারের নিপীড়নমূলক ব্যবস্থাকে এই অধ্যাদেশ নবায়িত করেছে মাত্র। এর মাধ্যমে পুলিশ ও জনগণের মধ্যে সুস্থ সম্পর্ক স্থাপনের স্থলে, সরকার এটিকে পুনরায় সংঘাত, অবিশ্বাস এবং শত্রুতার ভয়ংকর পথে ঠেলে দিল।
এর প্রেক্ষিতে জারিকৃত অধ্যাদেশ বাতিলপূর্বক নিম্ন লিখিত ৫ দফার ভিত্তিতে নতুন পুলিশ কমিশন গঠন করা হোক’- উল্লেখ করেন আবদুর রব
বিবৃতিতে ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন জেএসডি সভাপতি। সেগুলো হলো- ১. ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলের (Police Act 1861) পরিবর্তন করে স্বাধীন দেশের উপযোগী আইন প্রণয়ন করতে হবে। ২. পুলিশকে Guardian of Constitutional Rights’ তথা সাংবিধানিক অধিকারের রক্ষক হিসেবে সংজ্ঞায়িত করতে হবে। ৩. পুলিশ প্রশিক্ষণে মানবিক মর্যাদাকে (Human Dignity) প্রাধান্য দিতে হবে। ৪. আদেশ-নিয়ন্ত্রণের মানসিকতা থেকে পুলিশকে সেবা-জবাবদিহিতার মানসিকতায় রূপান্তর করতে হবে। ৫. পুলিশ কমিশন হবে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ও দলীয় প্রভাব মুক্ত। কমিশনের হাতে নিয়োগ, বদলি, শৃঙ্খলা, পদোন্নতি, নেতৃত্ব নিয়ন্ত্রণ ও নাগরিক অভিযোগ নিষ্পত্তির পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে।
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে আ স ম রব বলেন, ‘বর্তমান পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ অবিলম্বে প্রত্যাহার করুন। মানবিক, গণমুখী ও সাংবিধানিক নীতিনিষ্ঠ একটি পুলিশ সংস্কারের রূপরেখা বাস্তবায়ন করুন।’

