ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫

গাজীপুরে কারখানার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২৫, ০৯:০২ এএম
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানাধীন বিসিক শিল্প এলাকায় একটি ওয়াশিং কারখানার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (২৫ জুন) দুপুর ও সন্ধ্যায় দু’দফায় এ সংঘর্ষ হয়। এতে পুরো শিল্প এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং নিরাপত্তার আশঙ্কায় বেশ কয়েকটি কারখানায় অস্থায়ীভাবে কাজ বন্ধ রাখা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ‘ঢাকা ওয়াশিং প্ল্যান্ট-২’ নামের একটি কারখানার নিয়ন্ত্রণ ছিল সংঘর্ষের মূল কেন্দ্রবিন্দু। এই কারখানায় ওয়াশিং কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন যুবদল ও শ্রমিকদল নেতা মো. আবদুল কুদ্দুছ (৩৮) ও মো. শাকিল আহমেদ (৩২)। দুজনই টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বিল্লাল হোসেনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।

অন্যদিকে, ছাত্রদল নেতা মো. আকাশ (পরিচিত বিএনপি নেতা শাহনূর ইসলাম রনির অনুসারী হিসেবে) সকাল ১১টার দিকে ২৫-৩০ জন সহযোগী নিয়ে কারখানায় প্রবেশ করেন। তারা কুদ্দুছ-শাকিল গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন ড্রাই প্রসেস ইউনিটের কার্যক্রম জোরপূর্বক বন্ধ করে দেন এবং শ্রমিকদের বের করে দেন।

পরে কুদ্দুছ-শাকিল সমর্থকরা শ্রমিকদের ফিরিয়ে এনে পুনরায় কার্যক্রম শুরু করলে, বিকেল ৬টার দিকে পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আকাশ গ্রুপ পুনরায় কারখানায় প্রবেশ করে শ্রমিকদের বের করে দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়রা জানান, ওই সময় যুবদল নেতা দেলোয়ার হোসেন দেলো (সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ৪৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবদল) এর নেতৃত্বে কুদ্দুছ-শাকিলপন্থীরা বাঁশতলা রোডে জড়ো হন। এরপর দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্রের প্রদর্শন এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পর কুদ্দুছ ও শাকিল টঙ্গী পূর্ব থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, ছাত্রদল নেতা আকাশ ও তার সহযোগীরা চাঁদার দাবিতে বারবার কারখানার কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করছেন এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে হুমকির মুখে ফেলছেন।

অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কেউ মন্তব্য দিতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে বিসিক শিল্প এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন, ‘সম্প্রতি শিল্প এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ চক্র চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয়েছে। কেউ প্রতিবাদ করলেই তাদের ওপর হামলা ও মামলা দেওয়া হচ্ছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে শ্রমিক ও মালিকরা।’