জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশকে সামনে রেখে একদিন আগেই রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলটির নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা জামায়াত কর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন হাতে জড়ো হচ্ছেন। সমাবেশস্থলে ভিড় বাড়ছে ক্রমাগত।
সাত দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামীকাল শনিবার (১৯ জুলাই) জাতীয় সমাবেশ আয়োজন করতে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। এই সমাবেশের মাধ্যমে মূলত অন্তর্বর্তী সরকার, বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে নিজেদের শক্তির জানান দিতে চায় দলটি।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে তীব্র মতবিরোধ ও বিতর্ক চলছে সে সময়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জামায়াত এই সমাবেশ।
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এককভাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশের ডাক দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এর আগে বিএনপির সঙ্গে যৌথভাবে কয়েকটি সমাবেশে অংশ নিলেও এককভাবে এটিই প্রথম। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান।
গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিএনপি, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন রাজধানীতে বড় সমাবেশ করে। এর মধ্যে ইসলামী আন্দোলন, ওলামা-মাশায়েখ বাংলাদেশ ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ভিন্নভিন্ন ইস্যুতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করেছে। বিএনপি নয়াপল্টনে কয়েক দফা সমাবেশ করেছে। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী কারাবন্দি নেতা (বর্তমানে মুক্ত) এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে পুরানা পল্টন মোড়ে একটি সমাবেশ ছাড়া রাজধানীতে বড় কোনো জমায়েত করেনি।
৭-দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে জাতীয় সমাবেশের ডাক দিলেও অন্তরালে নানান হিসাবনিকাশ রয়েছে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দাবিগুলো হলো- অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ, সকল গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং এক কোটিরও বেশি প্রবাসীদের ভোট দানের ব্যবস্থার করা।
এদিকে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের জানান, সমাবেশ সফল করতে ইতিমধ্যে ট্রেন ও লঞ্চ বাদ দিয়ে ভাড়া করা হয়েছে ১০ হাজারের মতো বাস। তিনি বলেন, ‘সমাবেশে ১০ লাখের বেশি নেতাকর্মীর উপস্থিতি আশা করছি। শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষায় ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবে।’
আপনার মতামত লিখুন :