রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ১৮তম নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজে সম্মত হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এ নিষেধাজ্ঞায় স্লোভাকিয়ার আপত্তি প্রত্যাহারের পরই শুক্রবার এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা ইউনাইটেড প্রেস ইন্টারন্যাশনাল এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
নতুন নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজে রাশিয়ার তথাকথিত ‘শ্যাডো ফ্লিট’ (গোপন তেলবাহী জাহাজ বহর), জ্বালানি ও ব্যাংক খাতকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। তেলের মূল্যসীমা প্রতি ব্যারেলে ৬০ ডলার থেকে কমিয়ে ৪৫ ডলারে নামানো হয়েছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের রুশ নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
ইইউ-এর পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতিবিষয়ক প্রধান প্রতিনিধি কাজা কালাস বলেন, ‘আমরা আমাদের অবস্থানে অনড়। আমরা ক্রমাগত চাপ বাড়াব, যাতে মস্কোর জন্য আগ্রাসন বন্ধ করা একমাত্র পথ হয়ে দাঁড়ায়।’
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইন বলেন, ‘এই নতুন প্যাকেজের মাধ্যমে আমরা রাশিয়ার যুদ্ধযন্ত্রে আঘাত হানছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘চাপ বাড়ছে এবং বাড়তেই থাকবে, যতক্ষণ না পুতিন এই যুদ্ধ সমাপ্ত করেন।’
২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের পর থেকেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছে ইইউ। তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে এই নিষেধাজ্ঞার সংখ্যা বহুগুণ বেড়েছে। এরই মধ্যে ১৭টি প্যাকেজে ২ হাজার ৪০০-এরও বেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
১৮তম নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ কয়েকদিন ধরে আটকে ছিল স্লোভাকিয়ার আপত্তির কারণে। স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো চান, রুশ কোম্পানি গ্যাজপ্রমের সঙ্গে ২০৩৪ সাল পর্যন্ত চলা তাদের বিদ্যমান চুক্তি বহাল থাকুক। তবে বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় তিনি সেই দাবি প্রত্যাহার করেন।
উল্লেখ্য, ইইউ-এর যেকোনো নিষেধাজ্ঞা পাস হতে হলে ২৭টি সদস্য দেশের সম্মতি প্রয়োজন।
ইউক্রেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া সিভিরিদেঙ্কো এই নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘এই নিষেধাজ্ঞাগুলো রাশিয়ার যুদ্ধ পরিচালনার পেছনে থাকা নেটওয়ার্ক, ব্যাংক ও জাহাজগুলোর ওপর আঘাত হেনেছে। এখনো অনেক কিছু করার আছে, কিন্তু প্রতিটি সুসংহত পদক্ষেপ আমাদের বিজয়ের দিকে এক ধাপ এগিয়ে নেয়।’
আপনার মতামত লিখুন :