ক্ষমতার পালাবদলের জন্য জুলাই যোদ্ধারা জীবন ও রক্ত দেয়নি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
তিনি বলেন, জুলাইয়ের চেতনা ছিল ফ্যাসিবাদমুক্ত বৈষম্যহীন ইনসাফ ও ন্যায় বিচারের নতুন বাংলাদেশ। অন্যায়ের বিরুদ্ধে, ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ছাত্রদের নেতৃত্বে এদেশের সকল শ্রেণিপেশার মানুষ নিজের মৌলিক স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছেন। ১৯৪৭, ১৯৫২, ১৯৭১, ১৯৯০ আন্দোলনে বাংলাদেশের মানুষের যেই চেতনা ও প্রত্যাশা ছিল, সেই প্রত্যাশা প্রাপ্তিতে রূপ না নেওয়ার ফলেই ২০২৪-এর স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতা হচ্ছে মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মানুষের নাগরিক মর্যাদা ও অধিকার লাভের স্বাধীনতা। ছাত্র-জনতার প্রত্যাশিত নতুন বাংলাদেশ গড়তে অন্তর্বর্তী সরকারকেই পথ তৈরি করে যেতে হবে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) জামায়াতে ইসলামী শাহজাহানপুর পূর্ব থানার রুকন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, শুধুমাত্র একটি নির্বাচনের আয়োজনের জন্যই অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার ও গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহনমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা জন্য। যেই জুলাই যোদ্ধাদের রক্তের ওপর দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় বসেছে, সেই জুলাই যোদ্ধাদের জন্য সরকারের কোনো উদ্যোগ কিংবা পদক্ষেপ চোখে পড়ার মতো পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
খুনি হাসিনা গত বছরের ১ আগস্ট জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে গিয়ে নিজেই আজ জাতির কাছে নিষিদ্ধ হয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশে যারা বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের ভাষায় জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে অপপ্রচারে লিপ্ত আছেন তাদেরকে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পরিণতি দেখে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। হাজারো জুলুম-নির্যাতন করেও জামায়াতে ইসলামীকে নিঃশেষ করা যায়নি, জনগণের হৃদয় থেকে মুছে ফেলা যায়নি। কারণ জামায়াতে ইসলামী ভোগের কিংবা প্রতিহিংসার রাজনীতি করেনি, করবে না। জামায়াতে ইসলামী ত্যাগের ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার রাজনীতি করে এবং করবে। বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশিত একটি সুখি-সমৃদ্ধ বৈষম্যহীন কল্যাণ ও মানবিক বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
তিনি উপস্থিত রুকন সদস্যদের অতীতের মতোই দেশ ও জাতির জন্য নিরলস ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
শাহজাহানপুর পূর্ব থানা আমির মুহাম্মদ শরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ শামছুর রহমান।
এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে শাহজাহানপুর পূর্ব থানা জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শাহবাগ পশ্চিম থানার উদ্যোগে থানা কার্যালয়ে ষান্মাসিক রুকন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ষান্মাসিক রুকন বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
মহানগরীর মজলিসে শুরা সদস্য ও থানা আমির অ্যাডভোকেট শাহ মোহাম্মদ মাহফুজুল হকের সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারি এম. লোকমান হোসাইনের পরিচালনায় বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন থানা নায়েবে আমীর মাওলানা মেসবাহ উদ্দীন সায়েম, থানা কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আবদুল্লাহ আলফেসানী, থানা অর্থ সম্পাদক তানভীর আহমেদ, মাইনুদ্দীন ভুইঞা, ড. দেওয়ান এম এ সাজ্জাদ, নুরুল্লাহ মুহিত, আলমগীর হোসেন প্রমুখ।