গাজাগামী ত্রাণবাহী জাহাজ আটক করার ঘটনায় ইসরায়েলের ন্যক্কারজনক ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। একইসঙ্গে ক্ষুধার্ত গাজাবাসীর জন্য পাঠানো এসব ত্রাণবাহী জাহাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দলটির সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে বলেন হয়, গত বছরের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় প্রায় ৭০ হাজার নিরীহ মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার সতর্ক বার্তা অনুযায়ী, গাজায় ইতোমধ্যে দুর্ভিক্ষ ও রোগব্যাধি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দ্রুত পর্যাপ্ত ত্রাণ না পৌঁছালে হাজার হাজার নারী-শিশুর জীবন ঝুঁকিতে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করেন, ইসরায়েল ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র ১৩টি ত্রাণবাহী নৌযান আটক করেছে। সেখানে থাকা বহু আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীকেও হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। অথচ এসব জাহাজে ছিল খাদ্য, পানি ও ওষুধ, যা কেবলমাত্র গাজার নির্যাতিত জনগণের জন্য পাঠানো হচ্ছিল। তিনি বলেন, মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে বাধা দেওয়া আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের সামিল এবং এটি মানবতার বিরুদ্ধে ভয়াবহ অপরাধ।
বিবৃতিতে জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, দখলদার ইসরায়েল মূলত ফিলিস্তিনে জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালাচ্ছে। আন্তর্জাতিক পানিসীমায় মানবিক ত্রাণবাহী জাহাজে বাধা প্রদান করে তারা চরম অপরাধ করেছে। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এটিকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশে বলেন, ‘গাজার নিরীহ মানুষের প্রাণ বাঁচাতে ত্রাণবাহী জাহাজগুলো যাতে নিরাপদে পৌঁছতে পারে, সে জন্য ইসরায়েলের ওপর অবিলম্বে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে হবে। একইসঙ্গে আটক মানবাধিকার কর্মীদের নিরাপত্তা ও নিঃশর্ত মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, মুসলিম বিশ্বের পাশাপাশি সমগ্র আন্তর্জাতিক সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গাজায় মানবিক সংকট মোকাবিলায় এগিয়ে আসতে হবে। নইলে চলমান দমন-নিপীড়ন ও অবরোধ গাজাবাসীর জীবনকে আরও বিপর্যস্ত করে তুলবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন