বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বাসস

প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২৫, ১০:৩০ পিএম

দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান: সারজিস

বাসস

প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২৫, ১০:৩০ পিএম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম। ছবি- সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম। ছবি- সংগৃহীত

জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান হলো মানুষের দীর্ঘদিনের জমে থাকা ক্ষোভ আর সমাজের প্রতি দায়বোধের সম্মিলিত বহিঃপ্রকাশ- এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম।

বুধবার (৩০ জুলাই) বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

সারজিস বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাইয়ের আন্দোলন ছিল ছাত্রসমাজের অন্তর্গত চেতনার বিস্ফোরণ। কোটা সংস্কার আন্দোলন বা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কোনো আকস্মিক ঘটনা ছিল না। এটা ছিল মানুষের দীর্ঘদিনের জমে থাকা ক্ষোভ আর সমাজের প্রতি দায়বোধের সম্মিলিত বহিঃপ্রকাশ। আন্দোলনের প্রতিটি মুহূর্তে কেবল ছাত্র-ছাত্রীরা নয়, সাধারণ জনগণও নতুন এক চেতনায় জেগে উঠেছিল।’

তিনি বলেন, ‘তখন মনে হয়েছিল ছাত্ররা যদি নেতৃত্ব না নেয়, তাহলে জাতি আরও পিছিয়ে পড়বে। কোটা আন্দোলনের সময় আমরা যেমন রাজপথে ছিলাম, তেমনই বিশ্লেষণেও ছিলাম। প্রতিটি দিন, প্রতিটি সরকারি পদক্ষেপ বিশ্লেষণ করে বুঝে নিয়েছিলাম যে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তগুলো কেমন করে বৈষম্যমূলক হতে পারে। তখন ভাবলাম যদি আমরা চুপ থাকি, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছেও আমাদের কোনো জবাব থাকবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘এই দায়বোধ থেকেই আমরা নামি। কারণ, আমাদের কারো তো কোনো রাজনৈতিক পরিচয় ছিল না। আমরা তো ক্যারিয়ার কিংবা সুবিধা পাওয়ার জন্য নামিনি। বরং আমরা জানতাম, নামলে হয়তো গ্রেফতার হব, হয়তো নিখোঁজ হব, হয়তো পরিবার ভেঙে যাবে। তবু মনে হয়েছিল এই দেশটা তো আমাদেরও, এ দেশের ন্যায্যতার প্রশ্নে যদি ছাত্রসমাজ না দাঁড়ায়, তাহলে আর কে দাঁড়াবে?’

সারজিস বলেন, ‘আমরা নেতৃত্ব নয়, আন্দোলন গড়ে তুলতে চেয়েছি। এই আন্দোলনের মূল ভাবনা ছিল একক কোনো নেতা বা ব্যক্তির ওপর নির্ভর না করে সমন্বিত ও গণতান্ত্রিকভাবে একটি শক্তিশালী ছাত্র আন্দোলনের ভিত্তি গড়ে তোলা।’

তরুণ এই নেতা বিশ্বাস করেন যে প্রকৃত পরিবর্তন আসে সংগঠিত জনতার ঐক্য থেকে, যেখানে সবাই সমানভাবে অংশগ্রহণ করে, তখন ব্যক্তিবাচক ‘নায়ক’ বাদে সমষ্টিগত শক্তি সামনে আসে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ২০২৪ সালের জুলাই মাসে এক অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানের সাক্ষী হয়, যা শেষ পর্যন্ত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের পতনে গড়ায়। এই ঐতিহাসিক আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন কয়েকজন সাহসী ও দূরদর্শী তরুণ নেতা। তাদেরই একজন সারজিস আলম।

পঞ্চগড়ের আটোয়ারী থেকে উঠে আসা এই তরুণ প্রথমে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মাধ্যমে, পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে অমর একুশে হল থেকে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। কিন্তু প্রতিষ্ঠিত রাজনীতির প্রতি হতাশ হয়ে তিনি ২০২২ সালে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেন।

২০২৪ সালে তিনি ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর অন্যতম সংগঠক হিসেবে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সক্রিয় হন, যা দ্রুত রূপ নেয় সারাদেশব্যাপী এক গণআন্দোলনে।

আন্দোলনের পর তিনি ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং পরে ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি’র প্রধান সংগঠক হিসেবে যুক্ত হন। সর্বশেষ ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলীয় প্রধান সংগঠকের দায়িত্ব পান তিনি। রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের পথে তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং মানবিক মূল্যবোধকে সামনে রেখে গড়ে ওঠা নতুন এই ধারার রাজনীতিতে সারজিস আলম আজ এক গুরুত্বপূর্ণ নাম।

Shera Lather
Link copied!