অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর সন্দেহ আসতে শুরু করেছে: মির্জা ফখরুল

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৪, ০২:২৫ পিএম

অন্তর্বর্তী  সরকারের ওপর সন্দেহ আসতে শুরু করেছে: মির্জা ফখরুল

ছবি, রূপালী বাংলাদেশ

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সন্দেহ কিন্তু আপনাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) ওপর আসতে শুরু করেছে। আমরা তো চাই, সরকার সাফল্য অর্জন করুক, তাদের সাফল্য মানে আমাদের সাফল্য। তারা ব্যর্থ হলে আমরা ব্যর্থ হব। আমরা চাই না, শেখ হাসিনা আবার ফিরে আসুক। আমরা চাইনা, আওয়ামী লীগের দুশাসন আবার ফিরে আসুক।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‍‍`৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস‍‍` উপলক্ষে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদ (বিএসপিপি) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে গার্মেন্টস শিল্প, রেমিটেন্স, উচ্চ ফলনশীল ধান এর সূচনা হয়েছিল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে। নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করেছিলেন। তিনি কিভাবে আমরা তার অবদান ভুলি? তিনি বিশ্বাস করতেন গণতন্ত্র একমাত্র রাস্তা । দেশকে ধ্বংসকারীরা তাকে হত্যা করল।

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার পার্লামেন্টারি গভমেন্ট ঘোষনার মাধ্যম দিয়েই  স্বৈরাচার এরশাদকে সরানো গেছে। শেখ হাসিনা যখন কেয়ারটেকার গভমেন্ট বাতিল করলো, তখন আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারিনি, কেন পারলাম না? এটা তো কী সত্য? ১৫ বছর লড়াই সংগ্রাম করে আমরা তাকে সরাতে  পারিনি । ,তবে ফাইনাল গোলটা কিন্তু ছেলেরা দিয়েছে। এটা তো  স্বীকার করতেই হবে আমাদেরকে।

তিনি বলেন, আমাদের প্রায়োরিটি হচ্ছে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করা , গণতন্ত্রের জন্য স্পেস তৈরি করা। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলাপ আলোচনা মাধ্যমেই তো আমরা সংস্কারের ৩১ দফা তুলে ধরেছি । এখন নতুন যারা আসছেন তারা একেকজনের একেক কথা বলে যাচ্ছেন। অন্তর্বর্তী সরকারে যারা আছেন তারা তো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন। তাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাও নেই। রাজনীতি একটি সাইন্স এজন্যই তো বলা হয় পলিটিকাল সাইন্স। বিএনপি কি ক্ষমতায় জন্য নির্বাচনের কথা বলছে?  নো।  দ্রুত নির্বাচন দিলে ই দেশের অনেক সমস্যায় সমাধান হয়ে যাবে।

তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের ইন্টেলিজেন্সের ভিতরে তথ্য ছিল না? তারা কি এ ব্যবস্থা আগে নিতে পারতেন না? আসলে গভমেন্টটা এখনো স্ট্যাবল হতে পারেনি। তাই বলছি, নির্বাচন কমিশন ঠিক করে  নির্বাচন দেন, একটি রোড ম্যাপ ঘোষণা দেন, কবে কি করবেন জানান।  তাহলে মানুষের মনে আস্থা আসবে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে অনেকে হতাশ হয়ে পড়েছেন, অনেকে বলাবলি করেন এজন্যই কি সংগ্রাম করেছি? এতে করে আমাদের শত্রুরা সুযোগ নেবে। সরকার থেকে বিভিন্ন কথা বলা হচ্ছে। তবে আমি বলতে চাই , যেকোনো একদিকে ফোকাস দিন। পুলিশ প্রশাসন নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিন।  বাকি সংস্কার গুলো নির্বাচিত হয়ে যারা আসবেন তারা করবে।

নির্বাচিত হয়ে আসলে আমরা একা দেশ চালাবো না এমনটা জানিয়ে ফখরুল বলেন, আমরা একটি জাতীয় সরকার গড়ে, যারা আমাদের সাথে আন্দোলনে ছিল তাদেরকে নিয়ে দেশ চালাবো। তাহলে সমস্যাটা কোথায়? সন্দেহটা কোথায়? সন্দেহ  কিন্তু আপনাদের উপর আসতে শুরু করেছে। আমরা তো চাই, সরকার সাফল্য অর্জন করুক, তাদের সাফল্য মানে আমাদের সাফল্য। তারা ব্যর্থ হলে আমরা ব্যর্থ হব। আমরা চাই না , শেখ হাসিনা আবার ফিরে আসুক। আমরা চাইনা , আওয়ামী লীগের দুশাসন আবার ফিরে আসুক।

শিক্ষা কাঠামোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন,  ৫৩ বছরে আমরা কি সাফল্য অর্জন করেছি শিক্ষাখাতে, বিশ্বের এক হাজার ইউনিভার্সিটি মধ্যে আমাদের একটি ইউনিভার্সিটি সিরিয়ালে আসে না। কারন আমরা ঐক্যবদ্ধ জাতি না । দেশের সবচেয়ে ক্ষতি করেছে শেখ হাসিনা । দেশের সকল অর্জন ১৫ বছর শেষ করেছে সে।

আমাদেরকে ইস্পাত কঠিন সময়ে ঐক্যের জায়গায় এক থাকতে হবে বলে আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিএসপিপি এর আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সেলিম ভূঁইয়া, ড্যাবের সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. আজিজুল হক, ড্যাবের সভাপতি ড. হারুন আল রশীদ, প্রফেসর ড. আবু আহমেদ প্রমুখ।

আরবি/এস

Link copied!