সন্তান মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত বিশেষ নিয়ামত। তাদের যথাযথ প্রতিপালন শুধুমাত্র পারিবারিক দায়িত্ব নয়, বরং তা পিতামাতার ওপর অর্পিত এক গুরুত্বপূর্ণ দ্বীনি দায়িত্ব। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সন্তান প্রতিপালনের ক্ষেত্রে এমন কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন, যেগুলো সন্তানদের নৈতিক উৎকর্ষ, চারিত্রিক দৃঢ়তা ও আত্মিক বিকাশে অপরিসীম ভূমিকা রাখে। তাঁর নির্দেশনার আলোকে গড়ে ওঠা একটি সন্তান পরিবার, সমাজ ও জাতির জন্য আশীর্বাদস্বরূপ হতে পারে।
এখানে মহানবী (সা.) প্রদত্ত এমন ১০টি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা তুলে ধরা হলো-
১. বিশুদ্ধ আকিদার শিক্ষা
শৈশব থেকেই সন্তানের হৃদয়ে তাওহিদ ও তাকদিরের বিশ্বাস গেঁথে দিতে হবে। মহানবী (সা.) কিশোর বয়সে হযরত ইবনে আব্বাস (রা.)-কে এসব মৌলিক বিশ্বাস শিক্ষা দিয়েছিলেন।
২. নামাজের অভ্যাস গঠন
আল্লাহর রাসূল বলেন, ‘সাত বছর বয়সে সন্তানকে নামাজের নির্দেশ দাও, আর দশ বছরে প্রয়োজনে শাসন করো।’ (সুনান আবু দাউদ)
৩. সন্তানদের মাঝে সমতা রক্ষা
স্নেহ, উপহার কিংবা আচরণে কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব নয়। মহানবী (সা.) স্পষ্টভাবে সমতা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
৪. দয়া ও কোমলতা
সন্তানদের প্রতি সহানুভূতি ও স্নেহ প্রদর্শনে তিনি ছিলেন অনন্য দৃষ্টান্ত। ‘যে দয়া করে না, তার প্রতি দয়া করা হয় না।’ (সহিহ বুখারি)
৫. উত্তম চরিত্রের শিক্ষা
সন্তানের মধ্যে সততা, বিনয়, দায়িত্ববোধ ও সৎচরিত্র গঠনে পিতামাতাকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
৬. কন্যাসন্তানের গুরুত্ব
মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে দুটি কন্যাকে লালন-পালন করে, কিয়ামতের দিন সে আমার সঙ্গে থাকবে।’ (সহিহ মুসলিম)
৭. শিক্ষার প্রতি উৎসাহ
তিনি শিশুদের জ্ঞানার্জনে উৎসাহ দিয়েছেন এবং প্রজ্ঞার জন্য দোয়া করতেন, যেমনটি হযরত ইবনে আব্বাস (রা.)-এর জন্য করেছিলেন।
৮. পাপাচার থেকে দূরে রাখা
শান্তিপূর্ণ ও যুক্তিনির্ভর পদ্ধতিতে সন্তানকে পাপ থেকে দূরে রাখার শিক্ষা দিয়েছেন তিনি।
৯. কোরআনের প্রতি ভালোবাসা গড়ে তোলা
তিনি বলেন, “তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম সেই ব্যক্তি, যে কোরআন শিখে ও শেখায়।” (সহিহ বুখারি)
১০. সন্তানের জন্য দোয়া
তিনি বদদোয়া থেকে বিরত থাকতে বলেছেন এবং সন্তানের জন্য কল্যাণের দোয়া করতে উৎসাহ দিয়েছেন।