‘আউজুবিল্লাহ’ আরবি শব্দ। এর অর্থ আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই। এর পূর্ণ বাক্য ‘আউজুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম’র অর্থ ‘আমি বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই।’ আউজুবিল্লাহকে এক কথায় ‘তায়াউজ’ বলা হয়। আউজুবিল্লাহ পাঠের অনেক জায়গা আছে। এই আয়াত পাঠের ফলে নানাবিধ কল্যাণ লাভ করা যায়।
কোরআন তেলাওয়াতের শুরুতে
কোরআন তেলাওয়াতের শুরুতে আউজুবিল্লাহ পাঠ করা সুন্নত। কোরআন তেলাওয়াতের সময় যেন শয়তান ধোঁকা দিতে না পারে, সে জন্য আল্লাহর কাছে শয়তান থেকে আশ্রয় চাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘যখন তুমি কোরআন তেলাওয়াত করবে, তখন অভিশপ্ত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করবে।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ৯৮)
নামাজে শয়তান কুমন্ত্রণা দিলে
নামাজ পড়ার সময় শয়তান মানুষকে নানাভাবে কুমন্ত্রণা দিয়ে থাকে। নামাজরত অবস্থায় শয়তান কুমন্ত্রণা দিলে কি করতে হবে সে ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নির্দেশনা রয়েছে।
উসমান বিন আবুল আস (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বললেন, “হে আল্লাহর রাসুল, শয়তান আমার মধ্যে এবং আমার নামাজ ও কিরাতের মধ্যে অন্তরায় হয়ে আমার কিরাতে জটিলতা সৃষ্টি করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘এ হচ্ছে শয়তান, যাকে ‘খানজাব’ বলা হয়। তুমি তার আগমন অনুভব করলে আল্লাহর কাছে তিনবার আশ্রয় প্রার্থনা করবে (অর্থাৎ আউজুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম পাঠ করবে) এবং বাম দিকে তিনবার থুতু ফেলবে।’ উসমান (রা.) বলেন, এরপর থেকে আমি এমনটি করি। ফলে আল্লাহ তাকে আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দেন।” (মুসলিম, ২২০৩)
রাগ হলে
রাগ শয়তানের পক্ষ থেকে আসে। তাই রাগের সময় শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতে হবে। সুলায়মান ইবনে সুরাদ (রা.) বলেন, “আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে বসা ছিলাম। দুইজন লোক গালাগালি করছিল। তাদের একজনের চেহারা লাল হয়ে রগগুলো ফুলে গিয়েছিল।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘আমি এমন একটি দোয়া জানি, এই লোকটি তা পড়লে রাগ দূর হয়ে যাবে। সে যদি পড়ে ‘আউজুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম’, তা হলে তার রাগ চলে যাবে।’ তখন সুলায়মান তাকে বলল, নবি (সা.) বলেছেন, ‘তুমি আল্লাহর কাছে শয়তান থেকে আশ্রয় চাও।’ সে বলল, ‘আমি কি পাগল হয়েছি?” (বুখারি, ৩২৮)
মনের মধ্যে শয়তান কুমন্ত্রণা দিলে
আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘শয়তানের কুমন্ত্রণা যদি তোমাকে প্ররোচিত করে, তবে তুমি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করো, তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ।’ (সুরা আরাফ, আয়াত: ২০০)
মসজিদে প্রবেশের সময়
পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজসহ নানা কাজে মসজিদে প্রবেশ করে থাকেন মুসলমানরা। মসজিদে প্রবেশের সময় শয়তান কুমন্ত্রণা দেয়। কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচতে রাসুলুল্লাহ (সা.) আউজুবিল্লাহ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করে, সে যেন নবি (সা.)-এর ওপর দরুদ পড়ে বলে, হে আল্লাহ, আমার জন্য আপনার রহমতের দরজাসমূহ খুলে দিন। আর বের হওয়ার সময় যেন নবি (সা.)-এর ওপর দরুদ পড়ে বলে, হে আল্লাহ, আপনি আমাকে বিতাড়িত শয়তান থেকে রক্ষা করুন।’ (ইবনে মাজাহ, ৭৭৩)
আপনার মতামত লিখুন :