ঢাকা শুক্রবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৫

মোবাইলে বিয়ে করা কি জায়েজ

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০২৫, ০৯:৪৭ এএম
ছবি- সংগৃহীত

প্রবাসে অবস্থানরত মুসলমানদের মধ্যে অনেকেই মোবাইল বা অনলাইন মাধ্যমে বিয়ে করার বিষয়টি নিয়ে কৌতূহল প্রকাশ করেন। বিশেষত যারা দীর্ঘ সময় প্রবাসে থাকছেন এবং দেশে ফিরে স্থায়ীভাবে না থাকার পরিকল্পনা করছেন, তাদের জন্য এই প্রশ্ন খুবই প্রাসঙ্গিক। ইসলাম এই গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে সর্বোচ্চ মর্যাদা দিয়েছে। তবে বৈধ বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার জন্য শরিয়ত কিছু স্পষ্ট শর্ত আরোপ করেছে।

শরিয়তের বিধান অনুযায়ী, বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য পাত্র ও পাত্রী অথবা তাদের উকিলের মাধ্যমে ইজাব কবুল (প্রস্তাব ও গ্রহণ) একই মজলিশে এবং অন্তত দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে সম্পন্ন হতে হবে। যদি পাত্র বা পাত্রী সরাসরি উপস্থিত থাকতে না পারেন, তবে তারা নিজেদের পক্ষে নির্ভরযোগ্য উকিলকে দায়িত্ব দিতে পারেন। উকিলের মাধ্যমে ইজাব কবুল সম্পন্ন হলে বিয়ে বৈধ হবে।

১. পাত্রের উকিলের মাধ্যমে বিয়ে: প্রবাসে থাকা পাত্র দেশে একজন বিশ্বস্ত ব্যক্তিকে উকিল হিসেবে নিয়োগ করবেন। বিয়ের মজলিশে যখন পাত্রীপক্ষের অভিভাবক সাক্ষীর উপস্থিতিতে বলবেন, “আমি অমুকের মেয়েকে অমুক পরিমাণ মোহরের বিনিময়ে অমুকের সঙ্গে বিয়ে দিলাম”, তখন পাত্রের উকিল বলবেন, “আমি পাত্রের পক্ষে কবুল করলাম।” এভাবে বিয়ে সম্পন্ন হবে এবং শরিয়তসম্মত হবে।

২. পাত্রীর উকিলের মাধ্যমে বিয়ে: পাত্রীর অভিভাবক বিদেশে থাকা একজন নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিকে উকিল হিসেবে নিয়োগ করতে পারেন। উকিল মজলিশে উপস্থিত হয়ে বলবেন, “আমি অমুক মেয়েকে এই ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিলাম।” এরপর পাত্র সরাসরি তার সম্মতি প্রকাশ করবেন। এই প্রক্রিয়ায়ও বিয়ে বৈধ হবে।

শুধুমাত্র অডিও বা ভিডিও কলের মাধ্যমে সরাসরি ইজাব কবুল করা শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে বৈধ নয়। কারণ একই মজলিশে উপস্থিত হওয়ার শর্ত পূরণ হয় না। তবে মোবাইল বা ভিডিও কল ব্যবহার করে উকিল নিয়োগ করা এবং সাক্ষীর সামনে ইজাব–কবুল সম্পন্ন করা যেতে পারে। এতে বিয়ে বৈধ ও শরিয়তসম্মত হবে।

বিশেষ সতর্কতা: উকিলকে সর্বদা বিশ্বস্ত ও যোগ্য ব্যক্তি নির্বাচন করতে হবে। মোবাইল বা অনলাইন মাধ্যমে যোগাযোগের ক্ষেত্রে নিশ্চিত হতে হবে যে সাক্ষীদের উপস্থিতি এবং কথোপকথনের স্বচ্ছতা বজায় আছে। বিয়ের পর মোহর, শর্তাবলী ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সঠিকভাবে পালন করা জরুরি।

তথ্যসূত্র: ফাতাওয়া উসমানি: ২ / ৩০৫, বাদায়িউস সানায়ি: ২ / ২৩১, আদ্দুররুল মুখতার: ৩ / ১৪, রদ্দুল মুহতার: ৩ / ১২, ফাতাওয়া মাহমুদিয়া: ১১ / ১৬১, খুলাসাতুল ফাতাওয়া: ২ / ৪৯