ঢাকা শুক্রবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৫

শুক্রবারে কেয়ামত সংঘটিত হওয়া নিয়ে কুরআনে কী বলা আছে?

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০২৫, ০৪:৪২ পিএম
ছবি-সংগৃহীত

কুরআন ও হাদিসে কেয়ামতের দিনকে বিভিন্ন নামে উল্লেখ করা হয়েছে। যেন মানুষ সেই দিনকে মনে রেখে সতর্ক থাকে, উপদেশ গ্রহণ করে এবং বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করে। কেয়ামতের আরও পরিচিত নামগুলো হলো: বিচার দিবস, ফায়সালার দিন, হিসাবের দিন, পরিতাপের দিন, মহাসমাবেশের দিন এবং পুনরুত্থান দিবস।

আল কুরআনে বলা হয়েছে, কিয়ামতের দিন হবে এক ভয়াবহ ও বিভীষিকাময় দিন। এই ভয়াবহতা যে কত ব্যাপক হবে, তা কল্পনা করা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘সে দিন মানুষ বিক্ষিপ্ত পতঙ্গের মতো হবে।’ (সুরা কারিয়াহ : ৪)

অন্য আয়াতে তিনি বলেন, ‘যে দিন কিয়ামত উপস্থিত হবে, সে দিন মানুষ পলায়ন করবে তার ভাই, মা, বাবা, স্ত্রী ও সন্তান থেকে। সে দিন তাদের প্রত্যেকের অবস্থা হবে গুরুতর, যা তাকে সম্পূর্ণভাবে ব্যতিব্যস্ত করে রাখবে।’ (সুরা আবাসা : ৩৩-৩৭)

রাব্বুল আলামিন আরও বলেন, ‘হে মানুষ, তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় করো। কিয়ামতের প্রকম্পন এক ভয়ংকর ব্যাপার। যে দিন তোমরা তা প্রত্যক্ষ করবে, সে দিন প্রত্যেক স্তন্যধাত্রী তার দুগ্ধপোষ্য শিশুর কথা ভুলে যাবে এবং প্রত্যেক অন্তঃসত্ত্বা নারী গর্ভপাত করে ফেলবে। আর তুমি মানুষকে দেখবে মাতালের মতো অথচ তারা নেশাগ্রস্ত নয়। বস্তুত আল্লাহর শাস্তি খুব কঠিন হওয়ায় মানুষের অবস্থা এ রূপ হবে।’ (সুরা হজ : ১-২)

ভয়াবহ এই কেয়ামতকে ঘিরে বিশ্বের প্রতিটি মুসলমানের হৃদয়ে একটি প্রশ্ন ঘুরে ফিরে আসে—কখন কেয়ামত সংঘটিত হবে, কোন দিনে কেয়ামত সংঘটিত হবে!

এ প্রসঙ্গে আল কুরআনে বলা হয়েছে, কেয়ামত কখন সংঘটিত হবে, তা সম্পূর্ণরূপে মহান আল্লাহর জ্ঞান ও নিয়ন্ত্রণের অন্তর্ভুক্ত বিষয়। রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেন, ‘তারা তোমাকে কেয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে কখন তা সংঘটিত হবে।’ বলো, ‘এ বিষয়ে জ্ঞান রয়েছে আমার প্রতিপালকের নিকট। তিনি ছাড়া কেউ প্রকাশ করতে পারে না কখন তা ঘটবে। আসমান ও জমিনে তা হবে বড় এক কঠিন দিন। আকস্মিকভাবে তা তোমাদের ওপর এসে পড়বে।’ (সুরা আরাফ : ১৮৭)

কেয়ামত কোন সময়ে সংঘটিত হবে, এ বিষয়ে কেবল আল্লাহর জ্ঞান থাকলেও কোনদিন কেয়ামত সংঘটিত হবে, সেই দিনের কথা জানিয়েছেন রাসুল (সা.)। তিনি (সা.) জানান, কেয়ামত সংঘটিত হবে জুমার দিনে। তার ভাষায়, ‘সূর্য উদিত হওয়া দিনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমার দিন। এই দিনে আল্লাহ তায়ালা আদমকে (আ.) সৃষ্টি করেছেন। তাকে দুনিয়ায় নামানো হয়েছে। এই দিনেই তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। তার তওবা কবুল হয়েছে। এই দিনেই কেয়ামত সংঘটিত হবে। মানুষ ও জিন ছাড়া এমন কোনো প্রাণী নেই, যারা কেয়ামত কায়েম হওয়ার ভয়ে জুমার দিন ভোর থেকে সূর্য ওঠা পর্যন্ত চিৎকার করতে থাকে না। জুমার দিন একটি সময় আছে, কোনো মুসলিম যদি সে সময় নামাজ আদায় করে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাকে তা দান করবেন।’ (আবু দাউদ : ১০৪৬)