ঢাকা মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৫

যে পাপের শাস্তি ভোগ করতে হবে দুনিয়াতেই!

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২৫, ১১:২৮ এএম
প্রতীকী ছবি

সবাই মনে করেন শাস্তি বা প্রতিদান কেবল আখিরাতেই মিলবে। কিন্তু ইসলাম বলে, কিছু গুনাহ এমন রয়েছে যার ফল দুনিয়াতেই ভোগ করতে হবে। কুরআন ও হাদিসে এসব শাস্তির বর্ণনা অত্যন্ত স্পষ্ট—এগুলো শুধু পরকালের ভয় নয়, ইহজীবনেই নেমে আসে কঠিন পরিণতি।

ইহকালকে বলা হয় পরীক্ষার মঞ্চ। এখানে আল্লাহর নির্দেশ মেনে চললে রয়েছে জান্নাতের আশ্বাস, আর অবাধ্যতা ডেকে আনে আজাব। তবে নির্দিষ্ট কিছু পাপ এমন- যেগুলো অশান্তি, অনিষ্ট, ধ্বংস বা অপমানের বোঝা হয়ে নেমে আসে এই পৃথিবীর জীবনেই।

মাতা-পিতাকে অবহেলা: দুনিয়ার জীবনেই নেমে আসে ধ্বংস

হাদিসে বর্ণিত আছে, একদিন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনবার বলেছিলেন, ‘ওই ব্যক্তির নাক ধুলিমলিন হোক, সে ধ্বংস হোক।’ সাহাবাদের প্রশ্নে তিনি বলেন, সে হলো সেই মানুষ- যে বার্ধক্যে পিতা-মাতাকে পেল, তবুও জান্নাতে প্রবেশের যোগ্যতা অর্জন করতে পারলো না। অর্থাৎ মা-বাবাকে অবহেলা করলে তার অকল্যাণ শুরু হয় এখানেই।

সতী নারীর প্রতি অপবাদ: দুনিয়া–আখিরাত দুই জীবনই অভিশপ্ত

পবিত্র কুরআন জানায়, নিরপরাধ পবিত্র নারীর বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়ানোর শাস্তি ভয়াবহ। এ ধরনের অপরাধে অভিশাপ নেমে আসে দুনিয়াতেও, আখিরাতেও। এতে সমাজে অস্থিরতা বাড়ে, আর ব্যক্তিগত জীবনেও নেমে আসে অবনতি ও দুর্ভাগ্য।

আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা: তাৎক্ষণিক আজাবের ঘোষণা

হাদিসে এসেছে বিদ্রোহী ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী ব্যক্তিকে আল্লাহ দুনিয়াতেই শাস্তি দেন, আখিরাতের শাস্তি পর্যন্ত তার জন্য মুলতবি রাখেন না। কুরআন আরও বলেছে, যারা পৃথিবীতে ফ্যাসাদ ছড়ায় ও আত্মীয়তার বন্ধন কেটে ফেলে, তাদের ওপর আল্লাহর অভিসম্পাত নেমে আসে; তাদের কান বধির হয়ে যায় এবং দৃষ্টি অন্ধ হয়ে পড়ে।

ব্যভিচার: ঈমান সরে যায়, ফিরে আসে কেবল বিরত হলে

হাদিসে বলা হয়েছে, যখন মানুষ ব্যভিচারে লিপ্ত থাকে, তখন ঈমান তার অন্তর থেকে বেড়িয়ে মাথার ওপর ছায়ার মতো অবস্থান করে। পাপ কাজ থেকে ফিরে এলে তবেই ঈমান আবার অন্তরে ফিরে আসে। অর্থাৎ এই গুনাহ মানুষের আত্মিক শক্তিকে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

ইসলাম শেখায় পাপ কখনোই অদৃশ্য হয়ে যায় না। অনেক সময় তার শাস্তি নেমে আসে জীবনের মধ্যেই অশান্তি, অপমান, দুর্ভাগ্য বা সম্পর্কের ভাঙন হয়ে। মা-বাবার অবাধ্যতা, অপবাদ রটানো, আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা কিংবা ব্যভিচার এসব থেকে বাঁচতে প্রয়োজন সচেতনতা, আল্লাহর ভীতি ও ইসলামী নীতিতে জীবন গড়া।